কিডনির রোগ মূলত দুই ধরনের। আকস্মিক কিডনিবৈকল্য এবং দীর্ঘস্থায়ী কিডনির রোগ। দুই ধরনের রোগই প্রতিরোধ করা সম্ভব।
কিডনি ভালো রাখতে চাই সুস্থ জীবনধারা। শৈশব থেকেই স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। খাদ্যাভ্যাস হতে হবে ঠিকঠাক, শরীরকে রাখতে হবে সচল। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০ বছর মেয়াদি এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ১ লাখ ২০ হাজার মানুষের মধ্যে যাঁরা কায়িক পরিশ্রম করেছেন, জোরে হেঁটেছেন, নিয়মতান্ত্রিক খাদ্যাভ্যাস বজায় রেখেছেন, তাঁরা কম পরিশ্রমী এবং ভুল খাদ্যাভ্যাসে চলা মানুষের চেয়ে গড়ে ১৩ বছর বেশি বেঁচেছেন।
কিডনি রোগের ঝুঁকিতে রয়েছেন, এমন ব্যক্তির ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর রুটিন কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করাতে হয়, যেগুলোর মাধ্যমে প্রাথমিক পর্যায়েই কিডনির রোগ নির্ণয় সম্ভব। প্রাথমিক অবস্থায় রোগ ধরা পড়লে চিকিৎসা করা সহজ হয় আর জটিলতার ঝুঁকিও কমে যায়।
শৈশব থেকেই সন্তানকে স্বাস্থ্যকর জীবনধারায় অভ্যস্ত করে তুলুন। আপনিই আপনার সন্তানের সামনে উদাহরণ হয়ে উঠুন। পারিবারিক পরিসরে স্বাস্থ্যকর জীবনচর্চা দেখে বেড়ে উঠতে থাকা শিশু ভবিষ্যতেও নিজের প্রতি যত্নশীল থাকে।
ঝুঁকিতে কারা
৫০ বছর বয়স পেরোলে।
ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপ থাকলে।
ধূমপান করলে।
ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকলে।
খাদ্যাভ্যাস ও শরীরচর্চায় স্বাস্থ্যকর জীবনধারা মেনে না চললে।
দীর্ঘ মেয়াদে ব্যথানাশক সেবন করলে।
বারবার মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ হলে।
মূত্রতন্ত্রে পাথর হওয়ার ইতিহাস থাকলে।
এমন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে বছরে অন্তত দু’বার রক্তের ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষা (চিকিৎসক এখান থেকে ইজিএফআর হিসাব করে কিডনির অবস্থা বুঝতে পারেন) এবং প্রস্রাবের মৃদু মাত্রায় অ্যালবুমিনের উপস্থিতির পরীক্ষা (মাইক্রো-অ্যালবুমিন ইউরিয়া) করানো আবশ্যক। প্রাথমিক অবস্থায় রোগ নির্ণয় করা গেলে রোগের গতি কমিয়ে আনা সম্ভব, অনেক ক্ষেত্রে রোগের গতি একেবারে থামিয়েও দেওয়া যায়।
অধ্যাপক ডা. এম এ সামাদ
কিডনি রোগ ও মেডিসিন
বিশেষজ্ঞ
বিভাগীয় প্রধান
কিডনি রোগ বিভাগ, আনোয়ার
খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ
হাসপাতাল, ঢাকা