একটানা বসে বা শুয়ে থাকা রোগীদের এটা পরিচিত সমস্যা, জেনে নিন করণীয়

ডা. মো. বখতিয়ার

প্রকাশ : ০৫ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

এটি আসলে একই অবস্থানে একটানা বসে বা শুয়ে থাকায় রক্তসঞ্চালন কমে যাওয়ার ফলে হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ৭০ বছরের বেশি বয়সি মানুষের মধ্যে বেড সোর হতে দেখা যায়। এ ছাড়া যাদের ডায়াবেটিস ও অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদি রোগ আছে, তাদেরও বেশি হয়। হাসপাতালের বিছানায় লম্বা সময় থাকা রোগীদের এটা একটা পরিচিত সমস্যা।

সাধারণত পক্ষাঘাতগ্রস্ত রোগী, বড় অস্ত্রোপচারের পর, হাড়ভাঙা সারাতে প্লাস্টার করা অবস্থায় দীর্ঘ সময় শুয়ে থাকা রোগী বেড সোরের শিকার হন-

 

নানা অসুস্থতা, অস্ত্রোপচার বা অন্য কিছু কারণে দীর্ঘ সময় অনেককে শয্যাশায়ী থাকতে হয়। এতে হাড়ের ওপরের ত্বকে ও টিস্যুতে ঘা হতে পারে। একে বেড সোর বা প্রেশার সোর বলে।

এটি আসলে একই অবস্থানে একটানা বসে বা শুয়ে থাকায় রক্ত সঞ্চালন কমে যাওয়ার ফলে হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ৭০ বছরের বেশি বয়সি মানুষের মধ্যে বেড সোর হতে দেখা যায়। এ ছাড়া যাদের ডায়াবেটিস ও অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদি রোগ আছে, তাদেরও বেশি হয়। হাসপাতালের বিছানায় লম্বা সময় থাকা রোগীদের এটা একটা পরিচিত সমস্যা।

সাধারণত পক্ষাঘাতগ্রস্ত রোগী, বড় অস্ত্রোপচারের পর, হাড়ভাঙা সারাতে প্লাস্টার করা অবস্থায় দীর্ঘ সময় শুয়ে থাকা রোগী বেড সোরের শিকার হন।

প্রাথমিক পর্যায়ে একটানা চাপের কারণে ত্বকের কিছু এলাকায়, বিশেষ করে শক্ত হাড়ের ওপর চকচকে, লাল দাগ বা রঙের পরিবর্তন দেখা যায়। এটি শরীরের পেছনের দিকে ও কাঁধের চামড়ায় বেশি হয়। ধীরে ধীরে ত্বকের ওপরের আস্তরণের (এপিডারমিস) ক্ষতি করে আলসার বা ক্ষতের সৃষ্টি করে। হাড়ের ওপরের টিস্যুতে ক্রমাগত চাপ পড়ায় ত্বক ফুলে যায় এবং ত্বকের সংবেদনশীলতা কমে যায়। অবশেষে জীবাণুর সংক্রমণ ঘটে ও ওই এলাকার টিস্যু নষ্ট করে।

পুষ্টিহীনতার ফলে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যাওয়া, পানিশূন্যতা, পুষ্টিহীনতা, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও স্থূলতার (বাচ্চাদের ক্ষেত্রে) মতো বিষয় বেড সোরের ঝুঁকি বাড়ায়।

করণীয় :

ত্বকের রং পরিবর্তন বা লালচে রং দেখতে পেলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

বেড সোরের এলাকার ওপর চাপ কম করাতে রোগীর অবস্থান বারবার পরিবর্তন করতে হবে।

ত্বক, বিছানা ও কাপড় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা এবং সম্ভব হলে নিউম্যাটিক বেড বা এয়ার ম্যাট্রেস নামের বিশেষ বিছানা ব্যবহার করতে হবে।

ক্ষত দেখা দিলে নিয়মিত ড্রেসিং করা দরকার।

সংক্রমণের ক্ষেত্রে সাময়িক অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়। মলমও লাগানো যেতে পারে।

সতর্কতা :

বিছানার চাদরে বারবার ঘষা লেগে যাতে বেড সোর না হয়, সে দিকে লক্ষ রাখুন।

নরম, সুতির আরামদায়ক বিছানার চাদর ব্যবহার করা উচিত এবং নিয়মিত চাদর পরিবর্তন করতে হবে।

নিয়মিত ত্বকের যত্ন নিতে হবে। ত্বক সব সময় শুকনা রাখা দরকার।

পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি ও পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

ডা. মো. বখতিয়ার

খাজা বদরুদদোজা মডার্ন হাসপাতাল