ঢাকা ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ২০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

গর্ভাবস্থায় কোমরব্যথায় করণীয়

মো. নেছার উদ্দিন
গর্ভাবস্থায় কোমরব্যথায় করণীয়

প্রজেস্টেরন ও রিলাক্সেশন হরমোন অন্তঃসত্ত্বা নারীর অস্থিসন্ধির হাড়গুলোকে নরম ও ঢিলে করে দেয়। এর কারণ সন্তান জন্মদানের জন্য মায়ের শরীরকে প্রস্তুত করা। অস্থিসন্ধির এ পরিবর্তনের কারণে কোমরব্যথা হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জরায়ু বড় হতে থাকে। জরায়ুর এ পরিবর্তন পেটের পেশিকে দুর্বল করে। এর ফলেও কোমরব্যথা অনুভূত হয়। গর্ভকালে নারীর ওজন বৃদ্ধি পায়। এ বাড়তি ওজন বহন করতে গিয়ে কোমরের হাড়ে ব্যথা হয়-

গর্ভকালে প্রতি চার নারীর মধ্যে তিনজনই কোমরব্যথায় ভোগেন। বিশেষ করে শেষ তিন মাসে ব্যথাটা বেশ তীব্র হয়ে থাকে। তবে গর্ভাবস্থার প্রথম দিকেও ব্যথা হতে পারে। গর্ভস্থ শিশু যেদিকে অবস্থান নেয়, সেদিকেই সচরাচর ব্যথা বেশি হতে দেখা যায়।

কারণ : প্রজেস্টেরন ও রিলাক্সেশন হরমোন অন্তঃসত্ত্বা নারীর অস্থিসন্ধির হাড়গুলোকে নরম ও ঢিলে করে দেয়। এর কারণ সন্তান জন্মদানের জন্য মায়ের শরীরকে প্রস্তুত করা। অস্থিসন্ধির এ পরিবর্তনের কারণে কোমরব্যথা হয়।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জরায়ু বড় হতে থাকে। জরায়ুর এ পরিবর্তন পেটের পেশিকে দুর্বল করে। এর ফলেও কোমরব্যথা অনুভূত হয়।

গর্ভকালে নারীর ওজন বৃদ্ধি পায়। এ বাড়তি ওজন বহন করতে গিয়ে কোমরের হাড়ে ব্যথা হয়।

আমাদের পেলভিসে রাউন্ড লিগামেন্ট থাকে। জরায়ু বড় হওয়ার সঙ্গে এটি রাবাবের মতো বড় হতে থাকে এবং ক্রমশ পাতলা হয়ে যায়। যার ফলে হালকা নড়াচড়াতেও অন্তঃসত্ত্বা লিগামেন্টে ব্যথা পান।

করণীয় : নিয়মিত ব্যায়াম করলে বিভিন্ন পেশি শক্ত ও মজবুত থাকবে। যারা ব্যায়াম করেন, তারা কোমরব্যথার সঙ্গে সহজেই মানিয়ে নিতে পারেন।

শারীরিক পরিবর্তন ও অতিরিক্ত ওজনের কারণে কোমরের হাড়ে সব সময় একটা চাপ থাকে। তাই যদি দীর্ঘক্ষণ বসে কোনো কাজ না করে নির্দিষ্ট সময় পর পর একটু হাঁটাহাটি করুন। টানা বসে থাকলে কোমরব্যথা আরও বাড়বে।

সতর্কতা : নড়াচড়া বা চলাচলে তাড়াহুড়া করবেন না। বসা থেকে ওঠা বা ওঠা থেকে বসা ধীরস্থিরভাবে করুন। এ সময় ভারী জিনিস তোলা নিষেধ। এর পরও যদি করতেই হয়, সে ক্ষেত্রে হাঁটু ভেঙে বসে পড়ুন। এবার ধীরে ধীরে জিনিসটা ওপরে তুলুন। দাঁড়িয়ে কোমর বাঁকা করে কিছু তুলতে যাবেন না।

ঘুমানোর সময় অতিরিক্ত বালিশ দিয়ে পিঠে সাপোর্ট দিন। পেটের নিচেও বালিশ রাখতে পারেন। চেষ্টা করুন যেকোনো পাশ ফিরে ঘুমাতে; সোজা হয়ে নয়।

চিকিৎসা : ব্যথার স্থানে ঠান্ডা সেঁক দিন কিছুক্ষণ। এতে ব্যথা অনেকটা কমবে। আইসব্যাগ না থাকলে বরফ তোয়ালে দিয়ে মুড়ে সেঁক দিন। এ ছাড়া গরম কাপড় দিয়ে সেঁক দিলেও ভালো ফল পাবেন। প্রতিদিন ২০ মিনিটের মতো এই পদ্ধতি প্রয়োগ করে দেখতে পারেন। তবে পেটে ঠান্ডা বা গরম সেঁক দেবেন না।

পেটের বৃদ্ধির কারণে এ সময় সোজা হয়ে হাঁটা কঠিন হয়ে পড়ে। চেষ্টা করুন যতটা সম্ভব সোজা হয়ে হাটঁতে। এতে কোমরে চাপ কিছুটা কমবে।

কোমরব্যথা দূর করতে ম্যাসাজও উপকারী। যখন ব্যথা বেশি হবে, তখন খালি হাতে কোমরে হালকা ম্যাসাজ করতে পারেন। বিশেষ করে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে।

গর্ভকালে কোমরব্যথা একটি পরিচিত সমস্যা। পুরোপুরি কোমর ব্যথা হয়তো নিরাময় হবে না। তবে উল্লেখিত নিয়মগুলো মেনে চললে ব্যথার তীব্রতা কমবে।

মো. নেছার উদ্দিন

ফিজিওজোন, ফিজিওথেরাপি

সেন্টার, ঢাকা

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত