লিভার ক্যান্সার ঠেকাতে যা করতে হবে
অধ্যাপক ডা. ইয়াকুব আলী
প্রকাশ : ১৩ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
মানুষের জীবনাচারে বদল এসেছে। পরিবর্তন এসেছে খাদ্যাভ্যাসেও। এসব কারণে নতুন নতুন রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে। জটিল রোগগুলোর মধ্যে ক্যান্সার অন্যতম। আর বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে লিভার ক্যান্সার। লিভার বা যকৃৎ আমাদের পেটের ওপরের দিকে ডান পাশে থাকা একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, যেটি খাবার বিপাকক্রিয়ায় সাহায্য করে এবং শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ অপসারণ করে।
যকৃৎ কোষের ডিএনএতে মিউটেশন বা পরিবর্তনে লিভার ক্যান্সার হয়। একটি কোষের ডিএনএ হলো সেই উপাদান, যা শরীরের প্রতিটি রাসায়নিক প্রক্রিয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়ে থাকে। ডিএনএ মিউটেশন এ নির্দেশাবলির পরিবর্তন ঘটায়। আর এর ফলে কোষগুলো নিয়ন্ত্রণের বাইরে বাড়তে শুরু করে এবং অবশেষে একটি টিউমার তৈরি হয়।
কারণ :
হেপাটাইটিস বি ভাইরাস (এইচবিভি) বা হেপাটাইটিস সি ভাইরাসের (এইচসিভি) দীর্ঘস্থায়ী সংক্রমণের কারণে লিভার ক্যান্সার হতে পারে।
সিরোসিস হলে লিভার ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। বংশে কারও এ রোগের ইতিহাস থাকলেও লিভার ক্যান্সার হতে পারে।
চর্বি জমে লিভার ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
অতিরিক্ত অ্যালকোহল গ্রহণ করলে যকৃতের অপরিবর্তনীয় ক্ষতি হতে পারে এবং লিভার ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
দীর্ঘ সময় ধরে ছত্রাক বা টক্সিনযুক্ত ভেজাল খাবার খেলে লিভার ক্যান্সার হতে পারে।
লক্ষণ :
অকারণে ওজন কমে যাওয়া, খিদে বা রুচি কমে যাওয়া।
পেটের ওপরের দিকে ব্যথা, বমি বা বমি বমি ভাব, দুর্বলতা বা অতিরিক্ত ক্লান্তি।
পেট ফুলে যাওয়া বা পেটে পানি আসা।
চোখ ও ত্বক হলুদ দেখানো এবং জন্ডিস।
এসব উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
করণীয় :
হেপাটাইটিসের টিকা নেয়া জরুরি। যারা নেননি, তাদের লিভার ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি।
অ্যালকোহল, ধূমপান, ফ্যাটি বা চর্বিযুক্ত খাবার বাদ দিতে হবে। স্বাস্থ্যকর সুষম খাবার খেতে হবে।
যকৃতে যেন চর্বি না জমে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
বাদাম, গম বেশি দিন রেখে খাওয়া যাবে না।
অধ্যাপক ডা. ইয়াকুব আলী
রেডিয়েশন ও মেডিকেল অনকোলজি
প্রধান, অনকোলজি বিভাগ
আল-রাজী হাসপাতাল, ঢাকা