কথায় কথা বাড়ে

গৌতম কুমার রায়

প্রকাশ : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

দুই পরিবার ছেলের জন্য অনেক মেয়ে দেখে আবার মেয়ের জন্য অনেক ছেলে দেখে তাদের বাবা-মা ঘটা করে বিয়ের আয়োজন করেন। বিয়েতে ছেলের বাবা-মা ভাবলেন বৃদ্ধ বয়সে যেন সংসারের দায়িত্বটা ওদের হাতে অর্পণ করে একটু ফুরসৎ পাওয়া যায় আর কি। বিয়ের বয়স কবে এক এক করে দুই পেরিয়ে তিন। নববধূ তখন স্বামীর কানে প্রতি রাতেই আবদার করতে লাগলেন- ‘এই শুনছো বাবু কিন্তু বড় হচ্ছে। আব্বা কিন্তু বলেছেন শহরে বাসা নিতে। নোঙরকে স্কুলে দিতে হবে। এখন তো বাচ্চারা মায়ের কোলে থাকতেই স্কুলে যায়।’ স্ত্রীর কথা শুনে একবার স্বামী বলল, ‘তুমি কি বুজেছ কি বলছ। বুঝিনি মানে। দেখ, আমি অনেক সহ্য করেছি, আর না। আমার একটা ভবিষ্যৎ আছে। বাচ্চা মানুষ করতে হবে। তোমাদের সংসারে আমি অনেক ঘানি টেনেছি; কিন্তু আর না।’ স্বামী বলল, কেন আমার বাবা-মা আমাকে মানুষ করে নাই? উঁ! মানুষ। আয় করার মুরোদ নাই তার আবার মানুষ, বলল স্ত্রী। দিনে দিনে কথাগুলো শুনতে শুনতে বড় হচ্ছে নোঙর এবং তার দাদা-দাদি। মেয়ের বাপের বাড়ির লোকজন এলেই কথাগুলো চাউর হয় বেশি। ছেলের কষ্টের কথা ভেবে একদিন মা বললেন, হ্যাঁরে বাবা, দেখ না শহরে বাসা-টাসা নেয়া যায় কি-না। দেখেন তো আম্মা, আমি বলি আমরা শহরে থাকলেও... থাক মা আমি বুজেছি। ব্যাটার বৌয়ের মুখ থেকে কেড়ে নিয়ে বললেন মা। আমাদের কথা ভাবতে হবে না, তোমার ছেলে মানুষ করতে হবে। দেখ না, আমি করেছি। এখন তোমার পালা। সব বাবা-মা সন্তান মানুষ করে নিজের স্বার্থ হাসিল করতে। আমিও সে মতো...। আমাদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে আমি ছেলে মানুষ করেছি, এখন তোরা তোদের কথা ভেবে তোদের ছেলে মানুষ করবি। বাবা মার ভবিষ্যৎ ভেঙে দেখ অন্তত ছেলের ভবিষ্যৎ গড়া যায় কি-না।

০২.

দেশের ডোবা, পুকুর, নদী, দীঘি এখন দিন যাচ্ছে আর ভড়াট হয়ে যাচ্ছে। গেল ১০ বছরে অন্তত পাঁচবার জেলা প্রশাসনের কাছে লিখিতসহ ধরনা দিয়েছি। সব্বাই কিন্তু একই কথা বলেছেন, ‘জলাশয় ভতির্, বলেন কি! কঠোর হাতে এই অন্যায় দমন করা হবে। কিচ্ছু ভাববেন না। তারপর লাল রং চা খেয়ে খেয়ে অভিযান ইতি করেছি। কিন্তু জলাশয় ভড়াট বন্ধ না হলেও শহুরের প্রায় জলাশয় শেষ। এভাবে দায়িত্বশীল দায়িত্ব নিতে নিতে গত ২০ বছরে শহরের প্রায় সব পুকুরই ভরাট হয়ে গেছে; কিন্তু কঠোরহস্ত আর বাড়ে নাই।

একটি পুকুর তার আত্মহুতির কথাই বলেছে এমন করে, মান্যবরেষু, শুনেছি আমাদের দেখভাল এবং ভরাট বন্ধে ‘জলাশয় সংরক্ষণ আইন’ আছে। দেখুন না তবুও আমাদের গলা টিপে ধরে হত্যা করছে। কেউ ওদের রুখতে পারছে না। ওরা নাকি আমাদেরকে জলের মূল্যে কিনে আর ভরাট করে সোনার দামে বেচে। আইনটি ব্যবহার করে, লোভ সংবরণ করুন। আমাদেরকে একটু বাঁচানো যায় কি-না। আপনাদের অস্তিত্বের জন্যই তো আমাদের বেঁচে থাকা।

০৩.

একজন নির্বাহী প্রকৌশলী মেন্টেন্যান্সের পুরো টাকা গিলে ফেললেন। গর্ত রাস্তা আরো বড় বড় গর্তে পরিণত হলো। সমস্যার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টরা মেরামতের দাবি জানাল। পথচারীরা আন্দোলন করলে একজন কর্মচারী নির্বাহী প্রকৌশলীকে রাস্তা মেরামতের অনুরোধ জানায়। রেগে ওই প্রকৌশলী বললেন, জানেন আমি আপনার কি করতে পারি? কর্মচারী বললেন, ঈশ্বর আপনাকে শুধু চুরি করারই ক্ষমতা দিয়েছেন স্যার। কোনো উপকার করতে ক্ষমতা দেন নাই।

০৪.

এক দারোগা বাবু এক চোর সর্দারকে বলছেন, জানিস তিতু। কি স্যার। জানিস আমার ক্ষমতা কত্ত বড়? না তো স্যার। তুই চুরি না করলেও পেন্ডিং-এ ফেলে দিতে পারি। তাই স্যার। ওরে বাবা। আচ্ছা স্যার পেন্ডিং পানি কত গভীর? কি বললি? বলছি স্যার পেন্ডিং-এর পানি ভালো তো। স্যার আপনি জীবনে কতবার পেন্ডিং খেয়েছেন স্যার। হারামজাদা যে পেন্ডিং দেয় এ দেশে কি সে পেন্ডিং খায়?

০৫.

এম এন একাডেমি, নগরকান্দা, ফরিদপুরের ইংরেজি বিভাগের সাবেক শিক্ষক, বাবুল স্যার ইংরেজি পড়াতে গিয়ে ক্লাসে বলেছিলেন, ‘আমরা কতটা ভালো ইংরেজি জানি তা বুঝতে পারতে যদি তোমরা ইংরেজি কিছুটা হলেও জানতে।’

০৬.

এম এন একাডেমি, নগরকান্দা, ফরিদপুরের লাল স্যারের Same বাংলা কিছু ইংলিশ গল্পটা আজো জীবন্ত। রহিম উদ্দীন And করিম উদ্দীন began to মারামারি Under the কদুর জাঙ্গলা। করিম উদ্দীন attracted to রহিম উদ্দীন by কাঁচি ! ইংরেজ বিচারক বললেন, What called কাঁচি? বাংলার উকিল বাবু বললেন, স্যার কাঁচি is a one প্রকার দা। one side বুথা বুথা another side খাঁচ কাটা খাঁচ কাটা । হাঁ হাঁ হাঁ।

সঞ্চয়-এর একটি কমার্শিয়াল শোরুম ছিল শহরের অভিজাত এলাকায়। একদিন সঞ্চয়ের কাছে একটি পত্র এলো। ঠিকানাটায় নাম লেখা ছিল ‘মি. সঞ্চয় কুমার শিয়াল।’ (অর্থাৎ সঞ্চয় কমার্শিয়াল) বলুন তো এই নাম দেখে কার মাথা ঠিক থাকে?

০৮.

ঢাকার রাস্তায় নিত্য জ্যাম। অনেকে সয়ে গেছেন। এ সমস্যা অনেকেরই চিরচেনা। একদিন বাসে এই জ্যাম-এর বোর থেকে রেহাই পেতে পাশাপাশি সিটে বসা দুই যাত্রীর কথপোকথোন ‘ভাইজানকে খুব চেনাচেনা লাগছে। কোথায় যেন দেখেছি দেখেছি বলে মনে হয়। অপর যাত্রী, হ্যাঁ আপনাকেও তো খুব পরিচিত লাগছে আমার। আপনি কোথায় যেন যাচ্ছেন? অপর যাত্রী, আমি আদাবর যাচ্ছি। আদাবর! আরে আমিও তো ওখানেই যাচ্ছি। যাক, ভালোই হলো, বললেন আরেক যাত্রী। আপনি ওখানেই থাকেন বুঝি? অপরজন, হ্যাঁ ভাই, আমি ওখানেই থাকি। আরে আমিও তো ওখানেই আছি। চমৎকার ভাই, বলেন কী। আপনি কোথায় আছেন? কেন, জাপান গার্ডেন সিটি। কী! আমিও তো ওই বিল্ডিং থাকি। তো ভাই আপনে কত তলায় আছেন, ইস ৯ তলায় ডান পাশে। বলেন কী, কেন? আরে ভাই আমি তো ৯ তলার ডান পাশেই থাকি। সেই জন্য! এবারে পেছনের সিটের যাত্রী চিৎকার করে বলে উঠলেন, ‘আরে ভাই কী শুরু করেছেন এই জ্যামে বাসের মধ্যে।’ সামনের সিটের এক যাত্রী বলে উঠলেন, আরে ভাই আমরাও জ্যাম যন্ত্রণার হাত থেকে রেহাই পেতে ছেলের সঙ্গে এই নাটক করছি। তবুও তো সময় সরলেও গাড়ির চাকা চলছে না।

০৯.

এক চাপাবাজ হিসাব নিকেষ ছাড়াই চাপা মেরে চলেছেন। তার ছেলে এবারে ইন্টারমিডিয়েট পাস করে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে হতাশ। চাপাবাজ পিতা তার ছেলের বন্ধু যে কি-না আরেক প্রতিযোগী, তার কাছে গল্প করছে, আমি ছেলেকে বলে দিয়েছি।

বুয়েট, ঢাবির বায়োকেমিস্ট্রি, জাবির ফার্মেসি আর রুয়েট, কুয়েট যেন ফরম তোলে। টেক্সাটাইল? ও দরকার নেই। কেননা, আমি গার্মেন্টস টার্মেন্টস পছন্দ করি না। ওখানে মেয়েরা ছেলেদেরকে নষ্ট করে ফেলে।

এবারে ছেলের বন্ধু বললেন, ‘আঙ্কেল আপনার ছেলে তো আর্টস থেকে ইন্টার পাস করেছে ও এখানে পরীক্ষা দেবে কীভাবে।’ এবারে চাপাবাজের স্ত্রী রুক্ষ মূর্তিতে স্বামীকে বললেন, আপনার চাপাবাজি মাত্রা ছেড়েছে। কোথায়, কার কাছে কি কথা বলতে হয় সেটাও ভুলে গেছেন?

লেখক : গবেষক, উদ্ভাবক ও পরিবেশ ব্যক্তিত্ব

[email protected]