জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের জুমার বয়ান
অন্যায় ভাঙচুর যেমন অপরাধ, তথ্যসন্ত্রাসও তেমন অপরাধ
খতিব মুফতি আব্দুল মালেক
প্রকাশ : ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
গতকাল শুক্রবার জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে জুমাপূর্ব আলোচনায় খতিব মুফতি আব্দুল মালেক ইসকন সমর্থকদের ধারালো অস্ত্রের আক্রমণে শহীদ হওয়া অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফের রক্তকে অত্যন্ত মূল্যবান রক্ত বলে মন্তব্য করেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তাওহিদের কালেমা পাঠ করার অপরাধে চট্টগ্রামের তাওহিদবিরোধীদের হাতে যাকে শহীদ করা হয়েছে, তার প্রতি ফোটা রক্ত অত্যন্ত দামি। আর হত্যাকারী এবং সমর্থনকারীদের রক্ত তার তুলনায় মূল্যহীন। এই হত্যাকাণ্ডের বিচার আল্লাহর কাছে আমরা না দিলেও আল্লাহ বিচার করবেন।
সরকারেরও উচিত এর যথাযথ বিচার করা। এসব ঘাতক সংগঠন দেশের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে, অরাজকতা তৈরি করছে এবং দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র করছে, এটা যদি আমরা বুঝতে না পারি তাহলে কিছুই করার নেই।
অন্যায় ও তথ্যসন্ত্রাস প্রতিরোধের আহ্বান জানিয়ে খতিব মুফতি আব্দুল মালেক বলেন, ইসলাম ধর্মের বিপক্ষ শক্তিকে অন্যায়ভাবে সমর্থন করে যাওয়া ও ইসলামের সত্যকেও মিথ্যা মিশেল করে উপস্থাপন করার ক্ষেত্রে অন্যতম সহযোগী হচ্ছে তথ্যসন্ত্রাস সৃষ্টিকারী মিডিয়া, পত্র-পত্রিকা। তারা বছরের পর বছর মিথ্যা-বানোয়াট তথ্য প্রচারের মাধ্যমে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।
ইসলামের দৃষ্টিতে অন্যায় ভাঙচুর যেমন অপরাধ, তথ্যসন্ত্রাসও সমান অপরাধ। আমরা সকল প্রকার অপরাধের বিরুদ্ধে। সকল নাগরিককে এসব অপরাধের প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ করতে হবে।
তাকওয়ার ধারাবাহিক আলোচনার অংশ হিসেবে তিনি বলেন, তাকওয়ার প্রধান অংশ হচ্ছে তাওহিদ। এজন্য সকল নবী তাওহিদ ও শরিয়তের দাওয়াত নিয়ে এসেছেন। সকল নবী এই কথা বলেছেন: (অর্থ) : তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং আমার অনুসরণ করো। এজন্য মোমেনের প্রধান কাজ হচ্ছে, তাওহিদের ওপর অবিচল থাকা এবং তাওহিদ পরিপন্থি সকল কাজ থেকে বেঁচে থাকা। তিনি তার জুমাপূর্ব আলোচনায় আরো বলেন, তাওহিদের ওপর অবিচল থাকা এবং তাওহিদের জন্য সর্বস্ব ত্যাগ করার অনন্য উদাহরণ হচ্ছে আসহাবে কাহাফের ঘটনা। আল্লাহ তাদের ঘটনা কোরআনে বর্ণনা করেছেন। তারা দৃপ্ত কণ্ঠে ঘোষণা করেছেন, ‘আমাদের রব হচ্ছেন আসমান জমিনের রব।’ আল্লাহ ছাড়া আমরা কাউকে উপাস্য হিসেবে মানি না।
আমাদের মনে রাখতে হবে, তাওহিদ পরিপন্থি কোনো কথা বলা যাবে না। এটা অবশ্যই জঘণ্য বিষয়। এতে পাপের পথ উন্মোচিত হয়। সমাজে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। তাই সকল মুসলমানকে তাওহিদের ওপর; এক আল্লাহর ইবাদতের ওপর অটল থাকতে হবে। ইসলাম হচ্ছে পূর্ণাঙ্গ শান্তির ধর্ম। এই ধর্মে মানবজাতির ইহকালীন ও পরকালীন কল্যাণ রয়েছে। আজকে ইহুদি, খ্রিষ্টানরা সারা পৃথিবীতে সেবার নামে ধর্মপ্রচার করছে, অথচ তাদের কারো কাছেই শান্তির বার্তা নেই।
মানুষ বিজ্ঞানের কল্যাণে চাঁদে ভ্রমণ করছে আর হিন্দুরা এখনো গোমাতার পেছনে পড়ে রয়েছে। এগুলো সমালোচনা নয়; আক্ষেপের বিষয়। তাদের ধর্মগ্রন্থসমূহে ইসলামের নবীর আলোচনা রয়েছে। এগুলো গোপন রেখে তারা কখনো মানবতার কল্যাণ করতে পারবে না। কাদিয়ানীরাও ইসলামের নামে তাদের ধর্মপ্রচার করছে। এসব কোন কিছুতেই বাধা আসে না। আর শান্তির ধর্ম প্রচার করতে গেলে, তাওহিদের দাওয়াত দিতে গেলেই সব বাধা আসে।
অনুলিখন : মুহাম্মাদ লুতফেরাব্বী আফনান