সমকামিতা জঘন্য পাপ

আবদুল কাইয়ুম শেখ

প্রকাশ : ২০ মে ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

পুরুষের সঙ্গে পুরুষ এবং নারীর সঙ্গে নারী নিজের যৌন চাহিদা চরিতার্থ করার নাম সমকাম। সমকাম এমন অশিষ্ট, জঘন্য, কুৎসিত ও কুরুচিপূর্ণ কুকর্ম যে, জন্তু-জানোয়ারদের মধ্যেও সমশ্রেণির সঙ্গে যৌন চাহিদা চরিতার্থ করার অভ্যাস নেই। ইসলাম অত্যন্ত কঠোর ভাষায় স্বভাববহির্ভূত বিকৃত যৌনাচার সমকামকে হারাম ঘোষণা করেছে। মানবজাতির মধ্যে সর্বপ্রথম হজরত লুত আলাইহিস সালামের সম্প্রদায় এই কুকর্মে লিপ্ত হয়েছিল। তাদের এহেন কুকর্মের বিষয়টি কোরআন শরিফে উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ‘আর প্রেরণ করেছি লুতকে। যখন সে তার সম্প্রদায়কে বলল, তোমরা এমন অশ্লীল কাজ করছ, যা তোমাদের পূর্বে পৃথিবীর কেউ করেনি! তোমরা কি সমকামিতায় লিপ্ত আছ, রাহাজানি করছ এবং নিজেদের মজলিসে কুকর্ম করছ? জবাবে তার সম্প্রদায় শুধু এ কথা বলল, আমাদের ওপর আল্লাহর আজাব আন যদি তুমি সত্যবাদী হও।’ (সুরা আনকাবুত : ২৯-৩০)। হজরত লুত আলাইহিস সালামের সম্প্রদায়ের লোকেরা ব্যাপকভাবে সমকামিতায় লিপ্ত হওয়ার দরুন তাদের জনপদকে উল্টে দিয়ে অপরাধীদের ধ্বংস করা হয়েছিল। আজও যদি কোনো পুরুষ অপর কোনো পুরুষের সঙ্গে কিংবা কোন নারী অপর কোন নারীর সঙ্গে সমকামিতায় লিপ্ত হয়, তাহলে তাদের খোদায়ি গজবের সম্মুখীন হওয়ার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। সমকামিতায় লিপ্ত ব্যক্তিদের ব্যাপারে হাদিস শরিফে কঠোর হুঁশিয়ার বাণী উচ্চারিত হয়েছে। হজরত ইবনু আব্বাস (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা কাউকে যদি লুত সম্প্রদায়ের মতোই কুকর্মে লিপ্ত দেখতে পাও, তাহলে কর্তা ও যার সঙ্গে করা হয়েছে তাদের উভয়কে হত্যা করো।’ (সুনানে আবু দাউদ : ৪৪৬২)। অন্য আরেকটি হাদিসে এসেছে, হজরত ইবনু আব্বাস (রা.) বলেন, মহানবী (সা.) বলেছেন, যাকে তোমরা লুত (আ.)-এর কওমের মতো পুরুষে পুরুষে ব্যভিচার করতে দেখবে তাদের উভয়কে হত্যা করবে। আর যাকে কোনো জন্তুর সঙ্গে ব্যভিচার করতে দেখবে তাকে এবং জন্তুটিকেও হত্যা করবে।’ (বুলুগুল মারাম : ১২১৬)। ইসলাম সমকামিতাকে হারাম করার সঙ্গে সঙ্গে তা থেকে নিবৃত্ত থাকার উপায় নির্ধারণ করে দিয়েছে। পুরুষ পুরুষের লজ্জাস্থানের দিকে তাকানো এবং নারী নারীর লজ্জাস্থানের দিকে তাকানোকে ইসলাম হারাম বলে আখ্যায়িত করেছে। সঙ্গে সঙ্গে একই কাপড়ের নিচে এক পুরুষ অপর পুরুষের সঙ্গে উলঙ্গ অবস্থায় এবং এক নারী অপর নারীর সঙ্গে উলঙ্গ অবস্থায় শয়ন করতে নিষেধ করে দিয়েছে। হজরত আবু সাঈদ আল খুদরি (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, কোনো পুরুষ অপর পুরুষের লজ্জাস্থানের দিকে তাকাবে না এবং কোনো মহিলা অপর মহিলার লজ্জাস্থানের দিকে তাকাবে না; কোনো পুরুষ অপর পুরুষের সঙ্গে এক কাপড়ের নিচে (উলঙ্গ অবস্থায়) ঘুমাবে না এবং কোনো মহিলা অপর মহিলার সঙ্গে একই কাপড়ের নিচে ঘুমাবে না।’ (মুসলিম : ৬৫৫)।

লেখক : শিক্ষক, জামেয়া ইসলামিয়া ইসলামবাগ, চকবাজার, ঢাকা