সুফিকোষ

প্রকাশ : ০৬ জুলাই ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

তওহীদ : ইছলামের মূলভিত্তি তওহীদ বা খোদাতা’লার এককত্ব। ছুরা ফাতেহা, ছুরা এখলাছ, আয়াতুল কুরছি প্রভৃতি আয়াত শরীফে এই এককত্ব বর্ণিত হইয়াছে এবং এই জন্যই ইহাদের মর্ত্তবা (মর্যাদা) অত্যধিক। ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ ইছলামের মূলতত্ত্ব। ইহার মধ্যে মারেফতের অগণিত রহস্য লুক্কায়িত।

কলেমা তৈয়ব : কলেমা তৈয়বে বিশ্বাস স্থাপন করার নির্দ্দেশ শরীয়তে আছে। অধিকাংশ ব্যক্তির ভ্রান্ত বিশ্বাস যে, কলেমা তৈয়ব কণ্ঠস্থ করলেই ইছলামের নির্দ্দেশ সম্পন্ন হইল। হজরত এমাম গাজ্জালী (ইমাম গাজালি) ইহাকে বাদামের ছিলকার সহিত তুলনা করিয়াছেন। তিনি বলিয়াছেন যে, বাদামের আবরণ বা ছিলকা যেরূপ অকার্য্যকরী বলিয়া পরিত্যাক্ত হয়, খোদাতা’লা কর্ত্তৃক উক্ত কলেমার কেবলমাত্র মৌখিক আবৃত্তিকারী অকার্য্যকরী বলিয়া পরিত্যাক্ত হইবে। উক্ত কলেমার উপর বিশ্বাস ও আস্থা যতক্ষণ দৃঢ়ীভূত না হয়, ততক্ষণ মোমেন নামের বাচ্য হওয়া যায় না। এই বিশ্বাসকে এমাম গাজ্জালী বাদামের অন্তরস্থ আবরণের সহিত তুলনা করিয়াছেন। বহির্ভাগস্থ আবরণ হইতে ইহা নিশ্চয়ই মূল্যবান। আর যাহারা খোদাতা’লার সর্ব্বত্র বিদ্যমানতার নিদর্শন উপলব্ধি করিয়াছেন, তাহাদিগকে এমাম গাজ্জালী বাদামের অন্তরস্থ বীজের সহিত তুলনা করিয়াছেন। বাদামের শাঁসের মধ্যে যে তৈল লুক্কায়িত, উহাই বাদামের নির্য্যাস এবং সর্বাপেক্ষা মূল্যবান বস্তু। যাহারা খোদাতা’লার সাজুয্য লাভ করিয়াছেন এবং তাহার সহিত যোগাযোগ সাধন করিয়াছেন, তাহাদিগকে এমাম গাজ্জালী বাদামের নির্য্যাসের সহিত তুলনা করিয়াছেন। আরেফ তাহারাই, যাহারা এই যোগাযোগ সাধনে কৃতকার্য্য হইয়াছেন। এই সাধনই মারেফতের মুখ্য উদ্দেশ্য। খোদার অস্তিত্বে বিশ্বাস স্থাপন করিলেই শরীয়তের নির্দ্দেশ পালিত হয়, আর খোদাতা’লার সহিত যোগাযোগ সৃষ্টি করিলে তরীকতের উদ্দেশ্য পূর্ণ হয়। (কোরআনের শিক্ষা : ১৯)।

উল্লেখ্য, লেখকের বানান হুবহু রাখা হয়েছে।