ঢাকা ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

জ্ঞান কোষ

তাক্ওয়া

খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (রহ.)
তাক্ওয়া

তাক্ওয়া : ইহা একটি অমূল্য বস্তু। যেরূপ দুর্দান্ত পশুকে বশীভূত করিতে হইলে তাহাকে অনশনে রাখিয়া দুর্বল করিতে হয় সেইরূপ দুর্দান্ত নফ্ছকে অতিরিক্ত আহার ও ভোগ-বিলাস হইতে বঞ্চিত করিয়া নিস্তেজ করিতে হয়। ভোগ-বাসনা পরিত্যাগের নামই তাক্ওয়া। কোরআন তাকওয়াকে পুণ্যজনক কার্য বলিয়া প্রশংসা করিয়াছে। অন্যত্র কথিত হইয়াছে, ‘আল্লাহ্ তা’লা মুত্তাকীর সঙ্গী।’ (সূরা তাওবা, আয়াত : ৩৬)।

বিপদকে আল্লাহ্ তালার দান মনে করিয়া, সন্তোষের সহিত গ্রহণ করিতে হইবে। কথিত আছে “ছবর ঈমানের একার্দ্ধ ও শোকর ঈমানের অপরার্দ্ধ।” ছবর ও শোকর হৃদয়ের দুইটি উন্নত অবস্থা, উহা ব্যতীত এনছান তরক্কী করিতে সমর্থ হয় না। মস্তক অবনত করিয়া খোদা তা’লার দান গ্রহণ করিতে হইবে ও তৎসহ শোকরিয়া আদায় করিতে হইবে।

হজরত রাছুলুল্লাহ ফরমাইয়াছেন, আল্লাহ্ ইহলোকে যাহাকে বিপদ দিয়াছেন, পরলোকে তাহাকে আর কঠিন শাস্তি দিবেন না। সাংসারিক আপদণ্ডবিপদে বা রোগ-শোকে ইহলোকেই যদি পাপ ক্ষয় হইয়া যায়, তবে পরলোকের আর ভয় কিসের?

প্রকৃতপক্ষে বিপদণ্ডআপদ আল্লাহর করুণামূলক শাসন। সন্তানের ত্রুটি দেখিলে পিতা স্নেহের বশবর্তী হইয়া পুত্রের মঙ্গলহেতু শাসন বিধান করেন, তেমন আল্লাহ্ বান্দার প্রতি করুণার বশবর্তী হইয়া তাহার ভাবী মঙ্গলের জন্য আপদণ্ডবিপদের ব্যবস্থা করেন। বুদ্ধিমানকে এজন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা উচিত।

এমাম গাজ্জালি ছাহেব লিখিয়াছেন, কোন পয়গম্বর আল্লাহ্র দরবারে এইরূপ আবেদন করিয়াছিলেন, হে প্রভু! তুমি কাফেরদিগকে ধনে ও মানে তৃপ্ত করিতেছ ; আর মোমেনদিগের ওপর আপদণ্ডবিপদ নিক্ষেপ করিতেছ, ইহার কারণ কি? ইহাতে আল্লাহ্ তা’লা প্রত্যাদেশ করিয়াছিলেন- দেখ, জগতের সমস্ত বস্তুই আমার, মনুষ্য ও সম্পদণ্ডবিপদ সমস্তই আমার। মোমেনের পাপ দেখিলে আমি ইচ্ছা করি যে মৃত্যুর পূর্বেই সে যেন পাপমুক্ত হইয়া নিষ্কলঙ্ক অবস্থায় আমার নিকট উপস্থিত হইতে পারে এবং ইহলোকের আপদণ্ডবিপদ দিয়াই তাহাকে পরিশুদ্ধ করিয়া লই। অপর পক্ষে কাফেরগণ সৎকার্য করিলে, ইহরোকেই তাহাদিগকে ধন-সম্পত্তি, সুখ ও তৃপ্তি দ্বারা পুরস্কৃত করি। মৃত্যুর পর তাহারা আমার নিকট পুরস্কারের প্রত্যাশী হইতে পারিবে না, তখন তাহারা কুফরীর জন্য শাস্তিভোগ করিবে। (খান বাহাদুর আহ্ছানউল্লা, ছুফী, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন, ১০ম সংস্করণ : ডিসেম্বর ২০২০, পৃষ্ঠা- ৫৪-৫৫)

বি. দ্র. বানানের ক্ষেত্রে লেখকের বানানরীতি অপরিবর্তনীয় রাখা হলো

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত