ঢাকা ১১ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

পাপ থেকে বাঁচার উপায়

মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী
পাপ থেকে বাঁচার উপায়

অন্যায় ও অসত্য জীবন চলার পথে বর্জনীয়। আত্মা ও সমাজ ধ্বংসকারী অনৈতিক প্রতিটি কাজই পাপ। এ পাপের চর্চা মানুষকে মানুষের কাতার থেকে পশুর কাতারে নামিয়ে দেয়। সামাজিক বিপর্যয় সৃষ্টি করে। তাই পাপ ঘৃণিত ও সদা বর্জিত। প্রতিটি মানুষ চায় আমি পাপমুক্ত থাকি। আমার জীবন সুন্দর হোক। তবুও অনেকেই পারে না পাপমুক্ত থাকতে। কারণ শয়তান তো সার্বক্ষণিক পেছনে লাগা। সে তো চায় আমরা মানুষেরা যেন পাপে ডুবে থাকি। পাপ করে আল্লাহর অবাধ্য হই। নিজেকে জাহান্নামের উপযুক্ত করে ধ্বংস হই। তাই আমাদের প্রত্যেককে পাপ বর্জনে তৎপর হতে হবে। কীভাবে পাপ বর্জন করা যায় সে পথ ও পদ্ধতি রপ্ত করতে হবে। বুজুর্গানে দ্বীন পাপ বর্জন করার জন্য বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে থাকেন। পথ ও পদ্ধতি বাতলে দেন। তাদের পরামর্শের সারকথা হলো, তিনটি পয়েন্ট। ক. আল্লাহর ভয় সদা হৃদয়ে জাগ্রত রাখা। আল্লাহ আমাকে দেখছেন, আমার কথা শুনছেন তথা আল্লাহ হাজির ও নাজির এ বিশ্বাস মনে স্থির করা। এ বিশ্বাস তাজা থাকলে পাপ বর্জন করা সহজ। খ. আল্লাহওয়ালা নেককার বান্দাদের সান্নিধ্যে থাকা। কোনো বুজুর্গ আলেমের পরামর্শে নিজেকে পরিচালিত করা। গুরুত্বপূর্ণ সব কাজ সে আলেমের সঙ্গে পরামর্শ করে আঞ্জাম দেওয়া। এর মাধ্যমে জীবন পরিশুদ্ধ ও পরিশীলিত হয়। গ. আল্লাহর প্রেম অন্তরে পয়দা করা। আল্লাহর প্রেম অন্তরে থাকলে বান্দা পাপ কাজ করতে পারে না। আশেক তার মাশুকের অপছন্দনীয় কাজ করতে পারে না। এ প্রেম সত্যিকার অর্থে কারো অর্জিত হলে সে ইবাদতে স্বাদ পাবে। তখন কোনো ফরজ বিধান তার দ্বারা লঙ্ঘিত হবে না। এত্তেবায়ে সুন্নাহর কদর বাড়বে। সুন্নাহ ও নফল ইবাদতে মন ঝুঁকবে। ইবাদত করতে পারলে হৃদয়ে প্রশান্তি অনুভব করবে।

কোনো বান্দা যদি রুটিনমাফিক চেষ্টায় রত হয় যে, আমি পাপ বর্জন করব ইনশাআল্লাহ- এ প্রত্যয় নিয়ে, তাহলে তার উচিত এ কাজগুলো নিয়মিত করা।

১. আল্লাহর ভয় অন্তরে জাগ্রত রাখা। ২. বেশি বেশি মৃত্যুকে স্মরণ করা। ৩. নেককার বান্দাদের সংস্পর্শে থাকা ও অসৎ লোকদের সঙ্গ ত্যাগ করা। ৪. পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের পাবন্দি করা এবং সে সঙ্গে সুন্নাহ ও নফল ইবাদতের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা। ৫. নফল রোজা রাখা। ৬. দুনিয়ার মোহ ত্যাগ করা এবং আল্লাহর দেওয়া নেয়ামতকে বেশি বেশি স্মরণ করে কৃতজ্ঞতা আদায় করা। ৭. নিজের কুপ্রবৃত্তিকে ছোট করে না দেখা। ৮. বেশি বেশি জিকির করা। ৯. নিয়মিত কোরআন তেলাওয়াত করা। ১০. দিন শেষে ঘুমানোর আগে বিছানায় শুয়ে সারা দিনের কৃতকর্মের হিসাব করা। এ দশটি কাজ কোনো মোমিন ব্যক্তি নিয়মিত চর্চা করতে পারলে সে ইনশাআল্লাহ পাপমুক্ত থাকতে পারবে। এ কথাগুলো বানানো কথা নয়। কোরআন-হাদিসের সারনির্যাস। অলি-আউলিয়াদের পরীক্ষিত নির্দেশনা। আল্লাহ আমাদের সবাইকে পাপমুক্ত জীবন গঠন করার তৌফিক দান করুন। (ঢাকার চকবাজার থানাধীন জামেয়া ইসলামিয়া ইসলামবাগের প্রিন্সিপাল ও শাইখুল হাদিস মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দীর বয়ানের সংক্ষিপ্ত অনুলিখন করেছেন- ইবনুল ইহসান)।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত