ঢাকা ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

গোনাহে তওবা জরুরি

ইসমাঈল হুসাইন
গোনাহে তওবা জরুরি

আমরা সাধারণ মানুষ, আমাদের গোনাহ সংঘটিত হওয়াটা স্বাভাবিক বিষয়। গোনাহ সংঘটিত হওয়া কোনো আশ্চর্য বা অস্বাভাবিক বিষয় নয়, বরং আশ্চর্য হলো গোনাহের ওপর অটল অবিচল থাকা, তওবা না করা। এ কারণে আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে বার বার বান্দাকে তওবার প্রতি উদ্বুদ্ধ করেছেন। আল্লাহ বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর কাছে তওবা করো, আন্তরিক তওবা। আশা করা যায়, তোমাদের পালনকর্তা তোমাদের মন্দকর্মগুলো মোচন করে দেবেন এবং তোমাদের দাখিল করবেন জান্নাতে যার তলদেশে নদী প্রবাহিত। (সুরা : তাহরীম : ৮) অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘হে মোমিনগণ! তোমরা সবাই আল্লাহর কাছে তওবা করো। যাতে তোমরা সফলকাম হও। (সুরা নূর : ৩১)। পাপী বান্দা গোনাহ করে ক্ষমা চাইলে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেন। আল্লাহ তার বান্দাদের তার ক্ষমা হতে নিরাশ হতে বারণ করেছেন। আল্লাহ বলেন, (হে নবী) বলুন, হে আমার বান্দাগণ! যারা নিজেদের ওপর জুলুম করেছ, তোমরা আল্লাহর রহমত হতে নিরাশ হও না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সব গোনাহ মাফ করেন।

তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু (সুরা যুমার : ৫৩)। মানুষ যতই গোনাহ করুক না কেন, যদি মৃত্যুর আগে খাঁটি তওবা করে, সে তওবায় অটল থাকে, তাহলে তার সারা জীবনের যাবতীয় গোনাহ আল্লাহ মাফ করে দেবেন। আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘আর তিনিই (আল্লাহ) তাঁর বান্দাদের তওবা কবুল করেন এবং পাপগুলো ক্ষমা করে দেন। (সুরা আশ শুরা : ১৫)। রাসুল (সা.) বলেন, বনি ইসরাইলে এক ব্যক্তি ছিল যে ৯৯ জন মানুষ হত্যা করেছিল। এমন সময় একদিন তার মনে আল্লাহর ভয় হলো। পরকালের চিন্তা এলো। তখন সে লোকদের কাছে জিজ্ঞেস করতে লাগল, আমার জন্য তওবার কোনো সুযোগ আছে কি-না? লোকেরা এক পাদ্রীর সন্ধান দিয়ে বলল, যাও, তার কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করো। লোকটি ওই পাদ্রীর কাছে গিয়ে নিজের সব অপরাধ খুলে বলল এবং জিজ্ঞেস করল আমার ক্ষমার কোনো সুযোগ আছে কি-না? পাদ্রী সব শুনে বলল, সর্বনাশ, এত বড় অপরাধ! না তোমার কোনো সুযোগ নেই। লোকটি নিরাশ হয়ে ওই পাদ্রীকেই হত্যা করে ফেলল। এভাবে একশত মানুষ খুন করার পর সে আবারো লোকদের কাছে জিজ্ঞেস করতে লাগল, ভাই এমন কোনো লোক আছে যার কাছে আমি আমার তওবার বিষয়ে জিজ্ঞেস করব? তখন লোকেরা পুনরায় তাকে আরো এক বড় আলেমের সন্ধান দিল। তখন ওই লোকটি বড় আলেমের কাছে গিয়ে বলল, আমি এ পর্যন্ত একশত মানুষ হত্যা করেছি। এখন আমার তওবার কোনো সুযোগ আছে কি-না? আলেম সাহেব তাকে বললেন, কেনই বা নেই! অবশ্যই আছে। যাও অমুক বস্তিতে গিয়ে দেখ কিছু লোক আল্লাহর ইবাদতে মশগুল রয়েছে। তুমিও তাদের সঙ্গে গিয়ে ইবাদতে মশগুল হয়ে যাও। আল্লাহ তওবা কবুল করবেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত