ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সুফিকোষ

ইহলোক ও পরলোক সম্বন্ধে ইসলামের শিক্ষা

খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (রহ.)
ইহলোক ও পরলোক সম্বন্ধে ইসলামের শিক্ষা

কোরআন এক অচিন্ত্য এবং অবর্ণনীয় গ্রন্থ। মানুষ সসীম, তাহার জ্ঞানও সসীম। খোদা অসীম, তাহার জ্ঞানও অসীম। মানুষের জ্ঞান জড়জগতের সীমার মধ্যে, মানুষ জড়জগতের অতীত, সূক্ষ্ম জগতের ধারণা করিতে অক্ষম। জগৎ দুই প্রকার: জড় বা স্থূল এবং আধ্যাত্মিক বা সূক্ষ্ম। মানুষ material world সম্বন্ধে চিন্তা করিতে পারে, কিন্তু Spiritual World সম্পর্কে মানুষের জ্ঞান অসম্পূর্ণ ও অপরিপক্ব। প্রত্যেক মানুষ দেহ ও আত্মা সম্বলিত। দেহ ক্ষণস্থায়ী, আত্মা চিরস্থায়ী। মৃত্যুর সহিত দেহের অবসান, কিন্তু মৃত্যুর পরেও আত্মার প্রসার। মানুষ ইন্দ্রিয়াদির দ্বারা দেহের জ্ঞান লাভ করিতে সমর্থ। দেহ খাদ্য দ্রব্যাদির দ্বারা গঠিত ও পুষ্ট।

আত্মার পুষ্টি মনুষ্য কল্পনারও অতীত। খোদার আকার নাই, আত্মারও আকার নাই। জড় পদার্থ মাত্রই আকার বিশিষ্ট। মানুষ যখনই কোনো জড় পদার্থ সম্বন্ধে চিন্তা করে, তখনই তাহাকে কোনো না কোনো স্থান বা সময় সাপেক্ষ মনে করে। জড় পদার্থকে একই সময়ে বহু স্থানে কল্পনা করা যায় না, কিন্তু আত্মা একই সময়ে শত শত স্থানে উপস্থিত হইতে পারে, যেহেতু আত্মা স্থান ও সময়ের বেড়ীর বহির্ভূত। জড়পদার্থ মাত্রই স্থান ও সময়ের অন্তর্ভুক্ত, কিন্তু আত্মা স্থান ও সময়ের অন্তর্ভুক্ত নহে। ইহজগৎ ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য, পরজগৎ ইন্দ্রিয় গ্রাহ্য নহে। চক্ষু কর্ণ নাসিকা প্রভৃতি ইন্দ্রিয়ের অবসান, দেহের অবসানের সহিত অনিবার্য্য। সুতরাং মানুষ ইন্দ্রিয়ের দ্বারা পরজগতের প্রকৃত কল্পনা করিতে অসমর্থ। যে যাহাই কল্পনা করে তাহাই ইন্দ্রিয় জ্ঞান সম্ভূত। আধ্যাত্মিক জগৎ সম্বন্ধে সসীম মানব ইন্দ্রিয়ের সাহায্যে কল্পনা করিতে অক্ষম। মৃত্যুর পর মানুষের কী অবস্থা হইবে তাহা ইন্দ্রিয়লব্ধ জ্ঞান দ্বারা প্রকাশ করা যায় না। (ইছলামের দান, পৃ.৬৪)।

(লেখকের বানান হুবহু রাখা হয়েছে)।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত