ঢাকা রোববার, ২৩ মার্চ ২০২৫, ৯ চৈত্র ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

রোজার কাযা-কাফফারা

জুনাইদ ইসলাম মাহদি
রোজার কাযা-কাফফারা

রমজানে একটি রোজা ভাঙার পরিবর্তে রমজানের পর একটি রোজা রাখাকে কাযা বলে। আর একটি রোজা ভাঙার কারণে লাগাতর ৬০টি রোজা রাখাকে কাফফারা বলে। রোজার কাযা বা কাফফারা কেন দিতে হয়- এ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হলো।

কাযা ও কাফফারা : রমজানে রোজা রেখে দিনে স্ত্রী সহবাস করলে বীর্যপাত না হলেও স্বামী-স্ত্রী উভয়ের উপর কাযা ও কাফফারা ওয়াজিব হবে। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নিকট এসে বলল, আমি রোজা অবস্থায় স্ত্রী সহবাস করেছি। রাসুলুল্লাহ তাকে কাফফারা আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন। (বোখারি : ৬৭০৯ ; তিরমিজি : ৭২৪)

মুহাম্মাদ ইবনে কা’ব (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) ঐ ব্যক্তিকে (যে স্ত্রী সহবাসে লিপ্ত হয়েছিল) কাফফারা আদায়ের সাথে কাযা আদায়েরও আদেশ করেছিলেন। মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক : ৭৪৬১; আলবাহরুর রায়েক ২/২৭৬)। রোজা রেখে স্বাভাবিক অবস্থায় ইচ্ছাকৃতভাবে পানাহার করলে কাযা ও কাফফারা উভয়টি জরুরি হবে।

হাদিসে এসেছে, এক ব্যক্তি রমজানে রোযা রেখে (ইচ্ছাকৃতভাবে) পানাহার করল। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে আদেশ করলেন, যেন একটি দাস আযাদ করে বা দুই মাস রোজা রাখে বা ষাটজন মিসকীনকে খানা খাওয়ায়। (সুনানে দারাকুতনী : ২/১৯১)। ইমাম জুহরি (রহ.) বলেন, ‘রমজানে রোযা রেখে যে ইচ্ছাকৃতভাবে পানাহার করবে তার হুকুম ইচ্ছাকৃতভাবে দিনে সহবাসকারীর অনুরূপ।’ অর্থাৎ তাকে কাযা ও কাফফারা উভয়টি আদায় করতে হবে।-মাবসূত, সারাখসী ৩/৭৩; আলবাহরুর রায়েক ২/২৭৬)।

বিড়ি-সিগারেট, হুক্কা পান করলেও রোজা ভেঙে যাবে এবং কাযা ও কাফফারা উভয়টি জরুরি হবে। (রদ্দুল মুহতার : ৩/৩৮৫)। সুবহে সাদিক হয়ে গেছে জানা সত্ত্বেও আজান শোনা যায়নি বা এখনো ভালোভাবে আলো ছড়ায়নি এ ধরনের ভিত্তিহীন অজুহাতে খানাপিনা করলে বা স্ত্রী সহবাসে লিপ্ত হলে কাযা-কাফফারা দু’টোই জরুরি হবে। (সুরা বাকারা : ১৮৭; মাআরিফুল কোরআন : ১/৪৫৪-৪৫৫)।

কীভাবে কাযা-কাফফারা আদায় করব : একটি রোজার জন্য দুই মাস ধারাবাহিকভাবে রোজা রাখতে হবে। কোনো কারণে ধারাবাহিকতা ছুটে গেলে পুনরায় নতুন করে রোজা রাখতে হবে। পেছনের রোজাগুলো কাফফারার রোজা হিসাবে ধর্তব্য হবে না। তবে মহিলাদের হায়েযের কারণে ধারাবাহিকতা নষ্ট হলে অসুবিধা নেই। বিশিষ্ট ফকিহ ইবরাহিম নাখায়ী রাহ. বলেন, ‘যার উপর কাফফারা হিসাবে দুই মাস ধারাবাহিকভাবে রোজা রাখা জরুরি, সে যদি মাঝে অসুস্থ হওয়ার কারণে রোজা রাখতে না পারে, তাহলে আবার নতুন করে রোজা রাখা শুরু করবে।’ (আলমুহাল্লা ৪/৩৩১; মাবসুত, সারাখসী ৭/১৪; আলবাহরুর রায়েক ২/২৭৭;)

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত