ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

মা ও শিশুর যত্ন

মা ও শিশুর যত্ন

অনেকেরই ধারণা জন্মের পর থেকে শিশুর যত্ন নিতে হয়। ব্যাপারটা আসলে তা নয়। গর্ভাবস্থা থেকেই শিশুর বিশেষ যত্নের প্রয়োজন। সেই সঙ্গে সবল বাচ্চা জন্ম দিতে হলে মায়েরও সুস্থ থাকাটা বেশ জরুরি। এ রকমই শিশু ও মায়ের যত্ন নিয়ে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন শিশু-সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডা. সোহেলী আলম।

মায়ের যত্ন : গর্ভাবস্থা থেকেই মায়ের পুষ্টির দিকে খেয়াল রাখতে হবে। কারণ মায়ের সঠিক পুষ্টি ও যত্নের উপর নির্ভর করছে একটি সবল শিশুর জন্ম। অনেকেই মনে করেন মা বেশি খেলে বাচ্চা বড় হবে। সে ক্ষেত্রে জন্মের পর মায়ের সমস্যা হবে। তবে মায়ের জন্য মিনারেল, কাবোর্হাইড্রেটের মতো ৬টি উপাদানের প্রয়োজন। এই উপাদানগুলো যখন মায়ের শরীরে পরিমাণ মতো থাকবে তখনই একটি সুস্থ শিশুর জন্ম হবে। গর্ভাবস্থায় মায়ের খেয়াল রাখাটাও বেশ জরুরি। এই সময় একজন মাকে ভারী জিনিস তুলতে দেওয়া যাবে না। স্বামীর সঙ্গে পরিবারের অন্য সদস্যদেরও সহানুভূতিশীল হতে হবে। গর্ভাবস্থায় স্বামী-স্ত্রীর মিলন হওয়া উচিত নয়। বিশেষ করে থার্ড ত্রাইমেস্তারের (তৃতীয় স্তর) সময় একেবারেই নয়। নাহলে পানি ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ যেটা মাকে করতে হবে, সেটা হল মা অবশ্যই তার দুধের বোঁটার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। কারণ বোঁটা যদি ভোতা থাকে তাহলে শিশুকে দুধ খাওয়াতে অসুবিধা হবে। সে জন্য বোঁটা টিপে টিপে ম্যাসাজ করে চোখা করতে হবে, যাতে শিশু ঠিকমতে দুধ পায়। এছাড়াও খেয়াল রাখতে হবে বোঁটা ফেটে গেছে কি না। এ জন্য চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। নইলে শিশুকে জন্মের পরপর দুধ খাওয়াতে গেলে সমস্যা হতে পারে। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী anti-natal চেকআপ করাতে হবে। বিভিন্ন ধরনের টিকা সময়মতো নেওয়াটা মায়ের জন্য বিশেষভাবে জরুরি। এছাড়া যদি লেবার পেইন বা প্রসববেদনা নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে যাওয়ার পরও না হয় তাইলে দ্রুত ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। শিশুর যত্ন : জন্মের পরপরই বাচ্চার গায়ের লেগে থাকা সাদা মতো অংশগুলো পরিষ্কার করে ফেলতে হবে। তার পায়খানা ও প্রস্রাবের রাস্তা ঠিক আছে কি না, বা চোখের সমস্যা আছে কি না খেয়াল করতে হবে। অনেক সময় শিশুর খাদ্যনালী ঠিকমতো তৈরি হয় না। ফলে মুখ থেকে ফেনা বের হয়। তখন শিশুকে দ্রুত ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে। এ ব্যাপারগুলো সাধারণত ডাক্তাররাই খেয়াল করে থাকেন। নবজাতককে কাপড় দিয়ে ভালো করে মুড়িয়ে রাখা উচিত। তবে গরমের সময় হালকা কাপড় পরিয়ে রাখা ভালো। খেয়াল রাখতে হবে ঘাম যাতে না হয়। অনেক সময় ঘামের কারণে বাচ্চার ঠান্ডা লেগে যায়। বাচ্চাকে সবসময় বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। অনেক সময় দেখা যায়, প্রথমদিকে শিশু দুধ পায় না। এ জন্য তিনদিন অপেক্ষা করতে হবে। তবে বারবার টানতে দিতে হবে। আর দুদিক দিয়েই দুধ খেতে দিতে হবে। টানা একদিকে খেতে থাকলে অন্যপাশের বুকটা ভারী হয়ে যাবে। কোনো কারণে যদি দুধ একপাশে জমতে থাকে তাহলে সেটা টিপে টিপে বের করে একটা বাটিতে করে নিয়ে ফ্রিজে রেখে দিতে হবে। এরপর বাচ্চাটিকে ছোট চামচ দিয়ে খাওয়াতে হবে। ফিডার বা বোতলে দুধ খাওয়ার অভ্যাস একদম করা যাবে না। এই অভ্যাস হলে শিশু আর বুকের দুধ খেতে চাইবে না। এভাবে টানা ছয়মাস শিশুকে শুধু বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। আর কিছু খাওয়ানো যাবে না। এমনকি পানিও না। ছয়মাস পর থেকে বুকের দুধের পাশাপাশি শিশুকে ধীরে ধীরে অন্যান্য খাবার যেমন-- ভাত, ডাল, সবজি, ডিম, মাংস, মাছ এসব খাওয়ানোর অভ্যাস করতে হবে।

নারী
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত