ঢাকা ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

শিশুর স্কুলে যাওয়া...

শিশুর স্কুলে যাওয়া...

আপনি স্কুলে ভর্তি হয়েছিলেন চার বছর বয়সে। আপনার সন্তানের বয়স ঠিক তার অর্ধেক। অর্থাৎ দুই। এখন থেকেই চিন্তা করছেন প্লে-স্কুলে ওকে ভর্তি করবেন কিনা। বাবা-মা-শ্বশুর-শাশুড়ি যেই শুনে আঁতকে উঠেছেন। এই দুধের শিশু যাবে স্কুলে। সবার দিন কাটছে চিন্তায়। প্রথম স্কুলে যাওয়ার প্রস্তুতি। সামনে নতুন বছর যারা এবারই প্রথম স্কুলে যাবে তাদের মনে অজানা ভয়-আশঙ্কা আর আনন্দের মেশামেশি। প্রথম দিন স্কুলে যাওয়ার জন্য সন্তানকে প্রস্তুত করা একটা ভীতিকর অবস্থার সৃষ্টি করতে পারে। প্রথম স্কুলে যাওয়ার আগে শিশু এবং অভিভাবক দু’জনেরই কিছু প্রস্তুতির প্রয়োজন। যেহেতু সম্পূর্ণ অপরিচিত একটা পরিবেশ। হাঁটি-হাঁটি পা-পা করে দেখতে দেখতে আপনার আদরের ছোট্ট শিশুটি এখন ছুটে চলতে পারে, স্পষ্ট করে কথা বলতে পারে। এখন আর তার শুধু খেলাধুলা করে সময় কাটানোর সুযোগ নেই। এবার তাকে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য পড়াশোনায় মনোযোগী করে তুলতে হবে, স্কুলে ভর্তি করতে হবে। আমাদের আদরের সোনামণির প্রথম স্কুলে যাওয়া নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে এক ধরনের উচ্ছ্বাস লক্ষ করা যায়। পাশাপাশি রয়েছে নানা ধরনের উৎকণ্ঠাও। যেমন- আদরের সোনামণি স্কুলে গিয়ে মাকে ছাড়া একা একা থাকতে পারবে কিনা, কান্নাকাটি করবে কিনা, অন্যদের সঙ্গে মারামারি করে ব্যথা পাবে কিনাসহ নানা ধরনের উৎকণ্ঠা। সব উৎকণ্ঠা ঝেড়ে ফেলে সোনামণির উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নির্মাণে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সোনামণির স্কুলে যাওয়ার বিষয়ে সন্তানের পাশাপাশি অভিভাবকদেরও প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হয়।

সে বিষয়ে জেনে নেই : বর্তমানে বাচ্চারা মানুষ হয় খুব সীমিত একটা আবহের মধ্যে, যেখানে মা-বাবা দাদা-দাদি এবং আয়া ছাড়া বাইরের জগতের সঙ্গে খুব একটা যোগাযোগ থাকে না বললেই চলে। সবচেয়ে বড় কথা বেশির ভাগ সময়ে সমবয়সী কোনো ভাইবোন না থাকার দরুন অন্য বাচ্চাদের সঙ্গেও কোনো আদান-প্রদানই ঘটে না। এ দূরত্বটা কমিয়ে আনতে পারে কোনো ভালো প্লে-স্কুল। হঠাৎ করে নতুন কোনো পরিবেশে গিয়ে শিশু বেশিক্ষণ থাকতে চায় না। এজন্য শিশুকে স্কুলের প্রতি অভ্যস্ত করার জন্য সাহায্য নিতে পারেন প্রি-স্কুলের। আপনার শিশু এখন থেকে আস্তে আস্তে নতুন পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়ার পাশাপাশি নতুন নতুন বিষয়ও শিখতে পারবে। সাধারণত কিন্ডার গার্ডেন স্কুলগুলোতে প্রি-স্কুল এর ব্যবস্থা থাকে। শিশুদের জন্য প্লে-স্কুল বাছাই করার সময় সতর্ক থাকুন। শুধু মাত্র ব্র্যান্ডনেম না দেখে নিজে ঘুরে খুঁটিয়ে প্লে-স্কুলের কর্মপদ্ধতি দেখুন। ছোট বাচ্চাদের খুব দামি খেলনা বা লেখাপড়ার জিনিস লাগে না, প্রয়োজন যোগ্য সঙ্গীর এবং সময়ের। ভালো করে দেখে নিন প্লে-স্কুলের শিক্ষিকা এবং অন্যরা বাচ্চাদের কেমন করে দেখভাল করছেন। এ স্কুলে যাদের বাচ্চারা পড়ে এমন মা-বাবাদের সঙ্গেও কথা বলে নিতে পারেন। প্লে-স্কুলে বাচ্চারা শুধু খেলতে এবং মজা করতে যায়, পড়াশোনা নিয়ে একদম মাথা ঘামাবেন না। শুধু আপনার সন্তান আনন্দে আছে কিনা এটাই দেখার চেষ্টা করুন। পরিবার শিশুর প্রথম শিক্ষালয়। স্কুলে পাঠানোর আগে বর্ণমালা, গণনা, সাতটি বারের নাম (বাংলা ও ইংরেজি), মাসের নাম, জাতীয় প্রতীক, পশুপাখি ও ফুলের নাম শেখান। বাজারে আনন্দের সঙ্গে বা খেলতে খেলতে এসব বিষয় শেখার জন্য পশু পাখি, কার্টুনসহ বই পাওয়া যায়। এতে করে প্রথম প্রথম স্কুলে যাওয়ার পর আপনার শিশুটি বর্ণমালা সম্পর্কে একেবারেই অজ্ঞ থাকল না।

নারী
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত