পরিবার সুখ ও সমৃদ্ধিতে ভরে ওঠে মায়ের কল্যাণে। এক সময়ে নববধূর সাজে তিনি ঘরে পা রেখেছিলেন। তখন থেকে সংসারকে সাজিয়ে তুলেছেন আপন করে। পরবর্তী সময়ে তিনি হলেন সন্তানের মা। সন্তানকে বড় করার পর যখন তাকে বিয়ে দিলেন, তখন ঘরে এলেন আরেক নববধূ। তিনি এখন পরিবারের নতুন সদস্য। মতের অমিল, গার্হস্থ্য হিংসা ও পরস্পরবিরোধী দৃষ্টিভঙ্গির কারণে অধিকাংশ ঘরেই বউ ও শাশুড়ির মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। বউ-শাশুড়ির এ সংঘর্ষের ভেতরে বেচারা স্বামী নিরুপায় বোধ করেন। শাশুড়ির সঙ্গে পুত্রবধূর মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য কিছু উপায় মেনে চলতে হবে।
পুত্রবধূর করণীয় : শাশুড়িকে মূল্যায়ন করার বিকল্প নেই। চাকরিজীবী বা গৃহিণীরা অবশ্যই শাশুড়ির সঙ্গে ভালো ব্যবহার করবেন। শাশুড়িকে খুশি রাখতে চেষ্টা করবেন।
শাশুড়িকে জানুন ভালোমতো : শাশুড়ি যদি কোনো আদেশ করেন তাহলে সেটি তিনি কেন করতে বলছেন সে বিষয়ে চিন্তা করতে হবে। এক্ষেত্রে শাশুড়িকে ভালোভাবে জানা জরুরি। তার সঙ্গে ভালো জানাশোনা রাখা বউয়ের সাংসারিক জীবনে সুফল বয়ে আনে। তার সঙ্গে গল্প করার মাধ্যমে তাকে জানা যায়। তার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখা সব পুত্রবধূর দায়িত্ব।
মনে রাখতে হবে, আজকের দিনের পুত্রবধূ আগামী দিন শাশুড়ি হবেন।
প্রতিযোগিতা করবেন না : শাশুড়ির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করা অনুচিত। শাশুড়ির যুক্তিযুক্ত পরামর্শ শোনা পুত্রবধূর জন্য শোভাকর। শাশুড়ির দামি শাড়ি রয়েছে, সে কারণে ‘আমার’ আরো বেশি দামি শাড়ি চাই- এমনটি করে স্বামীকে ব্যতিব্যস্ত রাখবেন না। শাশুড়ির সঙ্গে কোনো অবস্থাতেই তর্ক করবেন না।
সময় দেন শাশুড়িকে : চাকরিজীবী বউদের উচিত অবসরে শাশুড়িকে সময় দেয়া। শাশুড়িকে রান্নার কাজে বা বিভিন্ন ঘরোয়া কাজে সাহায্য করলে তিনি খুশি হন। এতে তাকে মূল্যায়ন করার সুযোগ তৈরি হয়। বেশিরভাগ বউ-শাশুড়ির প্রতি অভিযোগ করেন। যা পরিবারের শান্তি বিনষ্ট করে। শাশুড়ির মনে জমে থাকা কথাগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনুন।
সুযোগ দিন : শাশুড়িকে কথা বলার সুযোগ দিন। তিনি রেগে গেলে তার সামনে পাল্টা কথা বলবেন না। তার কথাগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনুন। ঘরে শান্তি বজায় রাখার জন্য শাশুড়ির সব কথার জবাব দেয়া যাবে না। যদি তার কথা ভালো না লাগে, মুখে সেটি কখনো প্রকাশ করবেন না। এতে তিনি কষ্ট পান।
শাশুড়ির করণীয় : পুত্রবধূর কথা ভাবুন। তার সঙ্গে খোলামেলা কথা বলুন। বউকে মূল্যায়ন করুন। তবে নিজের দৃষ্টিভঙ্গিই সঠিক সেটি ভাববেন না। মানুষ হিসেবে আমরা সবাই ভুল করি- এমন চিন্তা করলে শাশুড়ি ও বউয়ের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে না।
পুত্রবধূকে বুঝুন : আধুনিক সময়ের চাকরিজীবী বউরা দিনের বেশিরভাগ সময় বাইরে অবস্থান করেন। সেই কারণে পুত্রবধূকে ভালোভাবে বোঝা বর্তমান সময়ের শাশুড়িদের দায়িত্ব। গুরুতর বিষয় ছাড়া তাদের ব্যাপারে অভিযোগ করা থেকে বিরত থাকবেন।
প্রশংসা করুন : পুত্রবধূকে কাছে পেতে তার প্রশংসা করুন। প্রশংসা পেতে সবাই ভালোবাসে। তার রান্নার প্রশংসা করুন। অন্যান্য ঘরোয়া কাজে তার দক্ষতার বিষয়ে তার সামনেই ভালো কথা বলুন। এর মধ্যে পুত্রবধূর সঙ্গে আপনার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হবে।
উপহার দিন : উপহার দেয়ার মাধ্যমে ভালোবাসা বাড়ে। ছেলের বাড়িতে যাওয়ার সময়ে পুত্রবধূর জন্য কিছু কিনে নিয়ে গেলে পুত্রবধূ খুশি হবেন। এর মাধ্যমে বউ-শাশুড়ি সম্পর্ক আরো সহজ হবে।
সাহায্যের হাত বাড়ান : পুত্রবধূর কোনো কাজে সাহায্যের হাত বাড়ালে তিনি খুশি হবেন। তাই বিভিন্ন ঘরোয়া কাজে তাকে সহায়তা করুন। পুত্রবধূকে সহায়তা করলে আপনার সম্মান ও মর্যাদা উন্নত হবে।