ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

জরায়ুতে ফাইব্রয়েড

জরায়ুতে ফাইব্রয়েড

বেশি বয়সে সন্তানধারণ করার সময় অনেক মহিলাকেই বেগ পেতে হয়। এই সমস্যার অন্যতম একটি কারণ হলো, জরায়ুতে টিউমার। বিনাইন টিউমারের পোশাকি নাম ফাইব্রয়েডস। সাধারণত ২১ থেকে ৫০ বছর বয়সি মহিলাদের জরায়ুতেই এ ধরনের টিউমারের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। বয়স ৩০-এর বেশি হলে অনেক নারীকেই সন্তানধারণে বেগ পেতে হয়। এই সমস্যার অন্যতম একটি কারণ জরায়ুর টিউমার। যা ফাইব্রয়েডস নামে পরিচিত। সাধারণত ২১ থেকে ৫০ বছর বয়সি নারীর জরায়ুতে এ ধরনের টিউমারের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। ফাইব্রয়েডস মূলত তিনটি জায়গায় হতে পারে। প্রথমত, জরায়ুর দেওয়ালের বাইরের দিকে।

একে সাবসেরাস বলে। দ্বিতীয়ত, জরায়ুর দেওয়ালের মধ্যে। একে ইন্ট্রামিউরাল বলে এবং তৃতীয়ত, জরায়ুর যে অংশ থেকে পিরিয়ড হয়, তাকে বলা হয় সাব-মিউকাস। বেশিরভাগ নারীই সাব-মিউকাস ফাইব্রয়েডসে আক্রান্ত হন। পিরিয়ডের সময় যে পেটে তীব্র যন্ত্রণা হয় তার পেছনে অধিকাংশ সময়ে দায়ী থাকে এই সাব-মিউকাস ফাইব্রয়েডস। এই সমস্যা থাকলে অত্যধিক রক্তক্ষরণ হয় এবং অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যা দেখা দেয়। জরায়ুতে এই টিউমার থাকলে গর্ভপাত হওয়ার আশঙ্কাও বেড়ে যায় কয়েক গুণ। কী কী উপসর্গ দেখলে সতর্ক হবেন? অনিয়মিত পিরিয়ড, অত্যধিক রক্তপাত এবং গর্ভধারণ ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিলেই ফাইব্রয়েডস আছে কি না, তা পরীক্ষা করে দেখা হয়। অনেক নারী পিরিয়ডের যন্ত্রণাকে অবহেলা করেন। যন্ত্রণা কমাতে বেদনানাশক ওষুধ খান। এই অবহেলা কিন্তু ভবিষ্যতে বড় বিপদ ডাকতে পারে। হঠাৎ পেট ফুলে যাওয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদিও ফাইব্রয়েডসের লক্ষণ হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, ৭-৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বার জরায়ুর আকার যেমন হয়, এ ক্ষেত্রেও পেটের আকার তেমনই হয়ে যায়। অর্থাৎ পেট অস্বাভাবিক ফুলে ফেলে সতর্ক হোন।

এছাড়া, প্রস্রাবের হার বেড়ে যাওয়া, প্রস্রাবের সময়ে তীব্র যন্ত্রণা, তলপেটে ব্যথাও এই রোগের উপসর্গ। জরায়ুর ফাইব্রয়েডের ঝুঁকি কাদের বেশি? এর সুনির্দিষ্ট কারণ সম্পর্কে এখনও কিছু জানা যায়নি। তবে কয়েকটি ‘রিস্ক ফ্যাক্টর’ থাকলে অসুখের ঝুঁকি বেশি থাকে। পরিবারের অন্য নারীর (মা, বোন, খালা) এই সমস্যা থাকলে রোগের ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে বেশি হয়। ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন হরমোন পিরিয়ডে জরায়ুর লাইনিং, অর্থাৎ আবরণকে উদ্দীপিত করে। ফলে ফাইব্রয়েড তৈরি হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। এসব স্ত্রী হরমোনই ছোট ফাইব্রয়েড বেড়ে উঠতে সাহায্য করে। এই কারণেই সন্তানধারণের ক্ষেত্রে ফাইব্রয়েডের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। এই রোগের সঙ্গে কি অন্য রোগের সম্পর্ক আছে? জরায়ুর ফাইব্রয়েড থাকলে পিরিয়ডের সময় অতিরিক্ত রক্তপাত হয়।

ফলে শরীরে রক্তাল্পতা বা অ্যানিমিয়ারও ঝুঁকি বেড়ে যায়। আবার অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হার্টঅ্যাটাক বা স্ট্রোকেরও ঝুঁকিও বাড়িয়ে দেয়। ফাইব্রয়েড হলে কিডনির কার্যকারিতাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ফাইব্রয়েড থেকে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে। তাই ছোটখাটো বিষয়গুলোকে অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত