গর্ভকালীন নারীর শরীরে হরমোনের পরিবর্তন ঘটে। তাই স্বাভাবিকভাবেই শরীরের অন্য অংশের মতো দাঁতেরও কিছু সমস্যা দেখা দেয়। এখন প্রশ্ন জাগতেই পারে, গর্ভবতীর দাঁতে কী কী সমস্যা হতে পারে? এসব সমস্যার প্রতিকার ও প্রতিরোধই বা কী? চলুন জেনে নেওয়া যাক গর্ভকালীন দাঁতের সমস্যা, প্রতিকার ও প্রতিরোধ সম্পর্কে-
গর্ভকালীন হরমোনের পরিবর্তন ঘটে। কাজেই মুখে লালার পরিমাণ কমে যায়। যে কারণে ডেন্টাল ক্যারিজ হওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায় বহুগুণে। এ সময়ে অধিকাংশ নারীর বমি হয়। এজন্য মুখে অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যায়। অনেকেই না বুঝে সঙ্গে সঙ্গে ব্রাশ করেন। ফলে দাঁতের এনামেল ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
গর্ভবতীর ঘন ঘন এবং যখন-তখন খাওয়ার ইচ্ছা জাগে। খাবার শেষে অলসতা করে অনেকেই দাঁত পরিষ্কার করেন না বা করতে চান না। এজন্য দাঁত থেকে দুর্গন্ধ বের হয় এবং দাঁতে ডেন্টাল প্লাগের সৃষ্টি হয়।
গর্ভাবস্থায় অনেকের ক্যালকুলাস বা জিনজিভাইটিসের কারণে মাড়ি ফুলে যায়। যে কারণে দাঁত থেকে রক্ত পড়তে পারে।
প্রতিকার : গর্ভকালীন পেস্ট ব্যবহার করলে বমি বমি ভাব হয়। এর জন্য ক্ষতিকর উপাদান ছাড়া মাউথওয়াশের দুই ফোঁটা ব্রাশে নিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে। পাশাপাশি বেশি করে পানি পান করতে হবে। দাঁতে ব্যথা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো প্রকার ব্যথার এবং এন্টিবায়োটিক সেবন করা উচিত নয়। এতে গর্ভের সন্তান নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে ব্যথার জন্য প্যারাসিটামল ট্যাবলেট খাওয়া যেতে পারে। গর্ভাবস্থায় দাঁত মজবুত করতে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার দুধ, ডিম, শাকসবজি ইত্যাদি বেশি বেশি খেতে হবে। এছাড়া ভিটামিন সি ও ভিটামিন বি১২ জাতীয় খাবার বেশি করে খান। বমি হওয়ার পরপরই পানি দিয়ে কুলি করে মুখ ভালো করে পরিষ্কার করতে হবে। মনে রাখতে হবে, বমি হওয়ার অন্তত ৩০ মিনিট পর ব্রাশ করতে হবে।
সমস্যা রোধে করণীয় : গর্ভাবস্থায় একজন নারীর সঙ্গে পরিবারের অন্যদের খেয়াল রাখতে হবে, যাতে দাঁতে খাবার জমে ডেন্টাল ক্যারিজ না হয়। মুখ সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
অতিরিক্ত মিষ্টি বা আঠালো জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। যে কোনো ধরনের কোমলপানীয় পান করা থেকে বিরত থাকতে হবে। পর্যাপ্ত ফল-মূল, দুধ, শাক-সবজি খাওয়া এবং পরিমিত পানি পান করা অত্যন্ত জরুরি।