হোমওয়ার্ক শিশুর শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। এটি শ্রেণীকক্ষের শিক্ষাকে শক্তিশালী করে, প্রয়োজনীয় দক্ষতা বিকাশে সাহায্য করে এবং দায়িত্ব ও টাইম ম্যানেজমেন্ট শেখাতে কাজ করে। অনেক শিশুর কাছেই হোমওয়ার্ককে বেশ কঠিন বলে মনে হয়। এক্ষেত্রে মা-বাবা শিশুকে সাহায্য করতে পারেন। এর মানে এই নয় যে মা-বাবা শিশুর হোমওয়ার্ক নিজে করে দেবেন। এর মানে হলো শিশু যেন ঠিকভাবে এবং সহজে হোমওয়ার্ক করতে পারে তার প্রতি যত্নশীল হওয়া-
পড়াশোনাবান্ধব পরিবেশ তৈরি করুন : বাড়িতে শিশুর পড়াশোনার জন্য অবশ্যই সহায়ক পরিবেশ থাকতে হবে। নিরিবিলি, ভালো আলো-বাতাস রয়েছে এমন কক্ষে শিশুকে পড়ার ব্যবস্থা করে দিন। সেখানে তার প্রয়োজনীয় যাবতীয় উপকরণ যেমন যেমন কলম, কাগজ এবং অন্যান্য সামগ্রী যেন সহজলভ্য থাকে সেদিকে খেয়াল রাখুন। এতে শিশুর মেধা বিকাশের পথ সহজ হবে।
রুটিন তৈরি করুন : যে কোনো কাজের ক্ষেত্রেই রুটিন থাকা গুরুত্বপূর্ণ। শিশুর হোমওয়ার্কের জন্য একটি সময়সূচি তৈরি করুন যা আপনার সন্তানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। কোনো কোনো শিশু স্কুল থেকে ফিরেই তাদের অ্যাসাইনমেন্ট তৈরি করে রাখতে পছন্দ করে। আবার কারও ক্ষেত্রে হোমওয়ার্ক করতে বসার আগে একটি ছোট বিরতির প্রয়োজন হতে পারে। নির্দেশনা প্রদান করা গুরুত্বপূর্ণ হলেও আপনার সন্তানকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে উৎসাহিত করুন। এটি তার দায়িত্ববোধ এবং আত্মনির্ভরশীলতা বাড়িয়ে তুলবে।
অগ্রাধিকার দিতে শেখান : আপনার সন্তানকে সময়সীমা এবং গুরুত্বের ওপর ভিত্তি করে অ্যাসাইনমেন্টকে অগ্রাধিকার দিতে শেখান। প্রথমে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বা কম সময়ের মধ্যে করতে হবে এমন কাজগুলো করতে বলুন। এতে তাদের চাপ অনেকটাই কমে আসবে। সেইসঙ্গে তারা সময়কে কাজে লাগানোর গুরুত্ব সম্পর্কেও বুঝতে পারবে। কাজের চাপ বেশি থাকলে তা শিশুর জন্য ভীতির কারণ হতে পারে। তাই কীভাবে কাজ করলে শিশুর চাপ কমে আসবে, সেদিকে নজর দিন।
সময় ব্যবস্থাপনা শেখান : আপনার সন্তানকে সময় ব্যবস্থাপনা বা টাইম ম্যানেজমেন্টের গুরুত্ব শেখান। কাজগুলো ছোট ছোট ভাগ করে করতে শেখান। একটি কাজ শেষ হলে অল্প সময়ের জন্য বিরতি দিন। ২৫ মিনিট পরপর ছোট বিরতি দিতে পারেন। পোমোডোরো টেকনিক নামে পরিচিত এই কৌশল উৎপাদনশীলতা বাড়াতে পারে এবং মানসিক ক্লান্তি কমাতে সাহায্য করে।
প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দিন : আপনার সন্তানকে পড়াশোনায় সহায়ক জিনিসগুলো ঠিকভাবে পৌঁছে দেন। যত বেশি রিসোর্স পাবে, অ্যাসাইনমেন্ট সম্পূর্ণ করা তাদের পক্ষে তত সহজ হবে। সন্তানকে প্রশ্ন করতে, যে কোনো বিষয় গভীরভাবে শিখতে এবং বুঝতে উৎসাহিত করুন। জ্ঞান অর্জন এবং দক্ষতা বৃদ্ধিই প্রাথমিক লক্ষ্য হওয়া উচিত।