ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

শিশুর টাইফয়েড হলে করণীয়

শিশুর টাইফয়েড হলে করণীয়

সাম্প্রতিককালে শিশুদের জ্বরের প্রকোপ ব্যাপকভাবে বেড়েই চলেছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এ রোগের তীব্রতা অভিভাবক ও চিকিৎসকদেরও উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এরই মধ্যে ডেঙ্গু জ্বর, টাইফয়েড জ্বর, প্রস্রাবে সংক্রমণজনিত জ্বর, রক্ত আমাশয় ইত্যাদি রোগ শিশুদের মধ্যে চরমভাবে দেখা দিয়েছে। পানিবাহিত রোগ টাইফয়েড জ্বর সালমোনেলা টাইফি নামক ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে হয়ে থাকে। সংক্রমিত হওয়ার ১০ থেকে ১৪ দিন পর জ্বরসহ এ রোগের অন্য লক্ষণগুলো দেখা দিয়ে থাকে। সালমোনেলা জীবাণু দূষিত পানি ছাড়াও দুধ অথবা দুগ্ধজাত সামগ্রী ব্যবহারের মাধ্যমে মানবদেহে সংক্রমিত হতে পারে। টাইফয়েডে প্রধানত জ্বর, যা ক্রমে সিঁড়ির ধাপের মতো বাড়তে থাকে। পাশাপাশি বমি, পাতলা পায়খানাসহ মাথাব্যথা হয়। এছাড়া পেটব্যথা, পেট ফুলে যাওয়াসহ জিহ্বার ওপর সাদা প্রলেপ পড়তে দেখা যায়।

সাত দিন জ্বর থাকার পর বুক, পেট ও পিঠে লালচে দানার মতো র‌্যাশ দেখতে পাওয়া যায়। প্রথম সাত দিনের জ্বর পার হওয়ার পরও যথাযথ চিকিৎসা শুরু না করা হলে শিশুদের মারাত্মক জটিলতা দেখা যায়। যেমন- খিঁচুনি, অসাড় বোধ করা, পেট ফুলে যাওয়া, রক্ত পায়খানা, জন্ডিস, এমনকি শিশুর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। কখনো চতুর্থ সপ্তাহে এসে জ্বর নিজ থেকে ভালো হতেও দেখা যায়। অন্যান্য জটিলতার মধ্যে নিউমোনিয়া, হাড়-অস্থি-সন্ধির প্রদাহ, স্নায়ুতন্ত্রের সংক্রমণ, হৃৎপিণ্ডের মাংসপেশি ও কিডনির প্রদাহ দেখা দিতে পারে।

রোগ নির্ণয় : জ্বরের প্রথম সপ্তাহে টাইফয়েডের জ্বর নির্ণয় করা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। তবে পরে রক্ত ও প্রস্রাব-পায়খানার কালচার পরীক্ষা করার মাধ্যমে এবং ভিডাল টেস্ট করে রোগ নিরূপণ করা সম্ভব।

যখন হাসপাতালে নিয়ে যাবেন : মাত্রাতিরিক্ত জ্বর, বারবার বমি, পেট ফুলে যাওয়া, পায়খানায় রক্ত, খিঁচুনি, অজ্ঞান হওয়ার মতো পরিস্থিতি হলে শিশুকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হবে।

চিকিৎসা : পুষ্টিকর খাওয়া-দাওয়া ও বিশ্রাম, জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল সিরাপ অথবা ট্যাবলেট দেওয়া যাবে। রক্তের কালচার পরীক্ষা করে যথাযথ অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করতে হবে। জ্বর কমে যাওয়ার পরও ৩ থেকে ৫ দিন অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খেতে হবে।

প্রতিরোধ : এ রোগ থেকে মুক্ত থাকার জন্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা মেনে চলা, নিরাপদ পানি বা খাবার গ্রহণ, স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ব্যবহার, টিকা প্রদান করার মাধ্যমে টাইফয়েড থেকে মুক্ত থাকা যায়। টাইফয়েড মোটেই ছোঁয়াচে কোনো জ্বর নয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত