ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

শিশুরা কেন মাকে জ্বালাতন করে!

শিশুরা কেন মাকে জ্বালাতন করে!

শিশুরা কখন কী করবে তা বোঝা না গেলেও তাদের কিছু প্রবণতা একই থাকে। কিছু শিশু সারা দিন সারা ঘর ছোটাছুটি করে, কারও কথা শুনতে চায় না আর রাজ্যের সব দুষ্টুমি করে বেড়ায়। কিন্তু বাবার সামনে গেলেই তাদের সেই নাছোড়বান্দা রূপ আর দেখতে পাওয়া যায় না। সব মায়েরই মনে প্রশ্ন থাকে কেন বাবার সামনে শিশুদের আচরণের এ পরিবর্তন ঘটে? বড়রা শিশুদের সহযোগিতামূলক আচরণ পছন্দ করে। বড়রা চায় শিশুরা যেন জেদি না হয় এবং কান্না কম করে, হাসে বেশি। শিশুদের সঙ্গে সবাই ভালো সময় কাটাতে চায়। তবে, কেন শিশুরা মায়ের তুলনায় বাবার সঙ্গে বেশি সহযোগিতামূলক, বাধ্য এবং প্রফুল্ল থাকে? আচরণের মাধ্যমেই মানুষ যোগাযোগ করে। আমাদের বোঝার ধরনের ওপর নির্ভর করে যোগাযোগ। শিশুদের বোঝার ধরন ভিন্ন এবং তাদের প্রতিক্রিয়া জানানোর ধরনও ভিন্ন। গবেষকরা কয়েকটি কারণ বের করেছেন যা বাবা-মায়ের প্রতি শিশুদের আচরণে ভিন্নতা তৈরি করে।

বেশি সময় দেওয়া- অন্তত বাংলাদেশে বেশিরভাগ পরিবারে বাবার চেয়ে মায়েরা শিশুদের সঙ্গে বেশি সময় কাটান। এমনকি চাকরিজীবী মায়েরাও শিশুদের লালন-পালনের বেশিরভাগ কাজ করে থাকেন। সকালে শিশুদের স্কুলে যাওয়ার জন্য তৈরি করা থেকে শুরু করে, তাদের যে কোনো কাজে এবং ঘুমানোর সময় বেশিরভাগ কাজ মা-ই দেখাশোনা করেন। কোনো শিশুর সঙ্গে কোনো প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ কতটুকু সময় কাটাচ্ছেন এর ওপর ওই ব্যক্তির সঙ্গে শিশুর আচরণ নির্ভর করে। দেখা যায়, কোনো মা যদি সন্তানের সঙ্গে দিনে ছয় ঘণ্টা সময় কাটান এবং বাবা যদি সন্তানের সঙ্গে দুই ঘণ্টা সময় কাটিয়ে থাকেন, তাহলে মাকেই সন্তানের অবাধ্য সব আচরণের মুখোমুখি হতে হবে। অর্থাৎ বাবা-মায়ের মধ্যে যিনি সন্তানের সঙ্গে যত বেশি সময় কাটাবেন, তিনি শিশুর আচরণে তত বেশি বৈচিত্র্য দেখতে পাবেন।

এ ক্ষেত্রে অন্য যে বিষয় প্রভাব ফেলে তা হলো : স্বাস্থ্যকর ও সহযোগিতামূলক মিথস্ক্রিয়ার জন্য বাবা-মায়ের মানসিক অবস্থা। বাবা-মায়ের কোনো একজন যদি বিরক্ত, ক্লান্ত বা মানসিকভাবে বিধ্বস্ত থাকেন তবে, সন্তানের সঙ্গে ইতিবাচক বা গঠনমূলক সম্পর্ক তৈরি করা কঠিন হয়ে পড়ে। এতে শিশুর আচরণে প্রভাব পড়তে পারে। সারা দিন খেয়াল রাখার পর সন্তানকে রাতে ঘুম পাড়াতে গিয়ে মায়ের ধৈর্য, সহানুভূতি ও মায়ার অনুভূতির বেশিরভাগই নিঃশেষ হয়ে যায়। ওই সময় মায়ের মানসিক শক্তি সন্তানের চ্যালেঞ্জিং আচরণগুলোই বের করে আনবে। অথবা মানসিকভাবে ক্লান্ত হয়ে পড়ার কারণে সন্তানের স্বাভাবিক আচরণও মায়ের কাছে অস্বাভাবিক বা বিরক্তিকর লাগতে পারে। উল্টোদিকে সারা দিন সন্তানের সঙ্গে না থাকায় স্বামীর মধ্যে ধৈর্য ও কৌতুকপূর্ণ মনোভাব অবশিষ্ট থাকে, যার ফলে সন্তানও বাবার সঙ্গে সহজ এবং আনন্দদায়ক প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত