প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর সঙ্গে আগামী ২০২৩ সাল পর্যন্ত চুক্তির মেয়াদ আছে বাংলাদেশের। তার পরও গুঞ্জন রটেছে চুক্তি শেষ হওয়ার আগেই হেড কোচকে বিদায় দিচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)! ভারতের বিপক্ষে ঢাকা টেস্ট শেষ হওয়ার দিন ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান জালাল ইউনুসও কোচিং প্যানেলে পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছেন। তবে প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো কিনা তা স্পষ্ট করেননি। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হোসেন পাপনও বিষয়টি অষ্পষ্ট করে রেখেছেন। উল্টো বলেছেন, ডমিঙ্গোর পারফরম্যান্সে তারা ভীষণ সন্তুষ্ট।
ঘরের মাঠে ভারতের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতলেও টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে। ঢাকা টেস্ট ৩ উইকেটে হারের পর গত রবিবার জালাল ইউনুস বলেছিলেন, ‘আমরা একটা শক্তিশালী দল চাই। কোয়ালিটি ক্রিকেট খেলতে হবে, হাইলি কম্পিটিটিভ ক্রিকেট খেলতে হবে। এমন নয় যে খেলছি খেলার জন্য, নিচের সারির দলের সঙ্গে জিতে খুশি হচ্ছি। আজ যেমন ভারতের সঙ্গে খুব ক্লোজ ম্যাচ ছিল। তাই আমাদের এমন কোচ দরকার টিমের মধ্যে তার প্রভাব থাকবে।’
সোমবার রাতে ধানমণ্ডি মাঠে এক অনুষ্ঠানে বোর্ড প্রধান নাজমুল হাসানের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু নতুন কোচের ব্যাপারে প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার আগে ডমিঙ্গোকে নিয়ে স্তুতি গাইলেন তিনি, ‘আমরা যদি পারফরম্যান্স দেখি তাহলে রাসেল ডমিঙ্গোর সময় অনেক রেকর্ড হয়েছে। আমরা প্রথম যেটা করি সেটাকে রেকর্ড ধরি। পারফরম্যান্স বলবে রাসেল ডমিঙ্গোর রেকর্ড খুবই ভালো এই কারণে যে, দেশের বাইরেও আমরা জেতা শুরু করেছি। যেটা আমরা কখনো করিনি।’
বোর্ড প্রধান আরও যোগ করে বলেছেন, ‘হাথুরুসিংহে আসার পর আমরা প্রথমবার ইন্ডিয়া, সাউথ আফ্রিকা, পাকিস্তান এসব দলের সঙ্গে সিরিজ জিতেছি। ওটা ছিল দেশের মাঠে। রাসেল ডমিঙ্গোর সময়ে আমরা কিন্তু দেশের বাইরে গিয়ে জেতা শুরু করলাম। ওয়েস্ট ইন্ডিজে জিতলাম, সাউথ আফ্রিকায় গিয়ে জিতলাম, নিউজিল্যান্ডে গিয়ে টেস্ট জিতলাম। ওর সময়ে দেশের বাইরে জেতা বেশি। দেশে তো আছেই নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে টি-টোয়েন্টি সিরিজও জিতেছি। এবার ভারতের সঙ্গে ওয়ানডে সিরিজ জিতলাম।’
তাহলে কোচিং প্যানেলে কেন পরিবর্তনের ইঙ্গিত? বিসিবি সভাপতি অবশ্য সেটি কিছুটা হলেও পরিষ্কার করেছেন। ঠাসা সূচিতে তিন ফরম্যাটেই একজনকে দিয়ে কাজ চালানোটা কষ্টসাধ্য ব্যাপার। পাপন তাই বলেছেন, ‘ব্যাপার হচ্ছে যে এখন যে পরিমাণ ম্যাচ, কোন কোচের পক্ষে তিন সংস্করণে খেলা সম্ভব না। অবশ্যই আমাদের আরও কোচ লাগবে। তার চেয়ে বড় কথা হচ্ছে শুধু একজন কোচ দিয়ে হবে না, আরও একজন লোক লাগবে।’
যেহেতু সিরিজের বাইরে ডমিঙ্গে ঠিকমতো সময় দিতে পারছেন না। পাশাপাশি অফফর্মে থাকা ক্রিকেটারদের ফর্মে ফেরাতেও খুব একটা কাজ করতে দেখা যায় না তাকে। এসব কথা মাথায় রেখে বিসিবিকে নতুন কোচের কথা ভাবতে হচ্ছে, ‘যে পরিমাণ খেলা কোচরা এখন যেটা করছে খেলার সময় যোগ দিচ্ছে। কিন্তু খেলোয়াড়দের উন্নতিতে কাজ করতে পারছে না, খেলোয়াড়রাও সময় দিতে পারছে না। এইগুলার মধ্যে একটা সমন্বয় আনা দরকার। কোচিংয়ের সমন্বয় দরকার। এটা নিয়ে মেগা পরিকল্পনা করেছি।’
নতুন কোচ নিয়োগ হলে ডমিঙ্গো বাদ পড়বেন নাকি থেকে যাবেন-এটা এখনো নিশ্চিত নয়। এর আগে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ডমিঙ্গোকে বাইরে রেখে শ্রীধরণ শ্রীরামকে কোচ হিসেবে এনেছিল বিসিবি। আগামী মার্চে ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিত হবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ। ওই সিরিজে হয়তো নতুন কোচের দেখা মিলতে পারে। তবে ডমিঙ্গোর ভাগ্যে কী আছে সেটি এখনও নিশ্চিত নয়।
বোর্ড প্রধানের কথাতে অবশ্য ডমিঙ্গোকে রেখে দেওয়ারই ইঙ্গিত, ‘কোচ নিয়োগ ইংল্যান্ড সিরিজের আগেও হতে পারে, পরেও হতে পারে। জানিয়ে দেবো। এটা সিদ্ধান্ত তা বলছি না। রাসেল ডমিঙ্গোর পাল্লা কিন্তু অনেক ভারি। যে যত কথাই বলুক না কেন, ওর পাল্লা ভারি।’