আফগানিস্তানের দেওয়া সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা পেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু মুহূর্তের মধ্যেই ৩ উইকেট হারিয়ে বেশ চাপে পড়ে গিয়েছিল টাইগাররা। তবে সাকিব ও তাওহিদ হৃদয়ের সাবলীল ব্যাটিংয়ে ৬ উইকেটে সহজ জয় পেয়েছে স্বাগতিকরা। এই জয়ে আফগানদের হোয়াইটওয়াশ করার সঙ্গে টি-টোয়েন্টিতে টানা তিনটি সিরিজ জিতল লাল সবুজের দল।
রোববার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। বৃষ্টিতে ১৭ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ১১৬ রান করে আফগানিস্তান। বৃষ্টি আইনে বাংলাদেশের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১১৯ রান। ৫ বল হাতে রেখেই ওই রান তাড়া করে স্বাগতিকরা। দুই ম্যাচের দুটিই জিতে সিরিজ নিজেদের করে সাকিব আল হাসানের দল।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা একদমই ভালো হয়নি আফগানদের। দুই উদ্বোধনী ব্যাটারকেই আউট করেন পেসার তাসকিন আহমেদ। প্রথম ওভারের পঞ্চম বলে ইবরাহিম জাদরানের ক্যাচ নিজেই নেন তিনি। ৫ বলে ৮ রান করে আউট হন এই আফগান ব্যাটার।
নিজের পরের ওভারে তাসকিন সাজঘরে ফেরান হজরতউল্লাহ জাজাইকে। ১ চারে ৫ বলে ৪ রান করা এই ব্যাটার উইকেটের পেছনে লিটন দাসকে ক্যাচ দেন। অষ্টম ওভারের সময় বৃষ্টি নেমে আসে। প্রায় দেড় ঘণ্টা বৃষ্টির পর খেলা ফের শুরু হয়। এর আগে পরে বেশ ভালো জুটিই গড়েছিলেন মোহাম্মদ নবি ও ইবরাহিম জাদরান।
তাদের ৩২ রানের জুটি ভাঙেন মোস্তাফিজুর রহমান। ২২ বল খেলে ১৬ রান করে লিটন দাসের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরত যান নবি। এরপর ১ চার ও ছক্কায় ২৭ বলে ২২ রান করা ইবরাহিমকে আউট করেন সাকিব আল হাসান। আফগানিস্তানের রান বাড়ে মূলত করিম জানাত ও আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের ব্যাটে ভর করে।
শেষদিকে বেশ দ্রুত রান তোলেন তারা। ২৯ বলে ৪২ রানের জুটি গড়েন দুজন। ২ চার ও ১ ছক্কায় ২১ বলে ২৫ রান করে মোস্তাফিজুর রহমানের বলে ওমরজাই আউট হলে জুটি ভাঙে। আফগানিস্তানের রান কমাতে দারুণ ভূমিকা রাখে মোস্তাফিজুর রহমানের করা ১৬তম ওভার। ওই ওভারে ৩ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন তিনি।
১ চার ও ছক্কায় ১৫ বলে ২০ রান করা করিমকে আউট করেন তাসকিন আহমেদ। শেষদিকে নেমে ২ বলে একটি ছক্কা হাঁকান রশিদ খান। বাংলাদেশের পক্ষে ৪ ওভারে ৩৩ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ। দুই উইকেট করে নেন মোস্তাফিজ ও সাকিব।
জবাব দিতে নেমে শুরুটা দারুণ হয়েছিল বাংলাদেশের। উদ্বোধনী ব্যাটারদের জন্য আতঙ্ক হওয়া আফগান বোলার ফজল হক ফারুকীর প্রথম ওভারেই আসে ১০ রান, দুটি চার হাঁকান লিটন। ওয়াফাদার মোমান্দের পরের ওভারে চারের হ্যাটট্রিক করেন তিনি।
পরে রান তোলার ঝড়ে যোগ দেন আফিফও। কিন্তু লিটন হয়ে পড়েন মন্থর। একসময় ১১ বলে ২৬ রান করা এই ব্যাটার আউট হন ৩৬ বলে ৩৫ রান করে। মুজিব উর রহমানের বলে অনেকটা ঝাঁপিয়ে দুর্দান্তভাবে তার ক্যাচ নেন রশিদ খান। এক বল পরই ফেরেন আফিফও। একাদশে ফিরেই ইনিংস উদ্বোধনের সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি।
মোটামুটি কাজেও লাগিয়েছেন, কিন্তু ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। ২ ছক্কায় ২০ বলে ২৪ রান করে ক্যাচ দেন করিম জানাতের হাতে। ৬ বলে ৪ রান করে আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের বলে বোল্ড হন নাজমুল হোসেন শান্ত।
৯ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারিয়ে বেশ বিপদে পড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। ওভারপ্রতি রান ৬ এর নিচে নামিয়ে আনলেও সেটি উঠে যায় ৭ এর উপর। সেখান থেকে দলের হাল ধরেন হৃদয় ও সাকিব। ১ চার ও সমান ছক্কার ইনিংসে ১৭ বলে ১৯ রান করে হৃদয় সাজঘরে ফেরেন।
তবে শেষ অবধি অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন অধিনায়ক সাকিব। ১ চার ও ছক্কায় ১১ বলে ১৮ রান করেন তিনি। এ নিয়ে ঘরের মাঠে টানা তৃতীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতল বাংলাদেশ।