এশিয়া কাপে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুর ধাক্কা সামলে উঠে শেষ পর্যন্ত ২৬৬ রান তুলে অলআউট হয়েছে ভারত।
আজ শনিবার ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের টসের আগেই বাগড়া দিয়েছিল বৃষ্টি। ক্যান্ডির পাল্লেকেলে স্টেডিয়ামের মাঠ কয়েকবার কভার দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত যদিও নির্দিষ্ট সময়েই টস হয়েছে।
শ্রীলংকার পাল্লেকেলে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ বৃষ্টিতে দুই দফায় খেলা বন্ধ ছিল। প্রথম দফায় বৃষ্টির পর খেলা শুরু হলে শাহিন শাহ আফ্রিদি পরপর দুই ওভারে সাজঘরে ফিরিয়েছেন ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা ও সেরা ব্যাটার বিরাট কোহলিকে। পঞ্চম ওভারে রোহিতকে (২২ বলে ১১) বোল্ড করেন আফ্রিদি। পরের ওভারের তৃতীয় বলে পরাস্ত করেন কোহলিকে (৭ বলে ৪)। সিঙ্গেল নেয়ার উদ্দেশে শট খেলতে চেয়েছিলেন কোহলি, যদিও পিচে বল খুব দ্রুত আসছিল বলে তিনি পরাস্ত হন এবং ইনসাইড এজ হয়ে বোল্ড।
ভারতের তৃতীয় উইকেটটি শিকার করেন আরেক পেসার হারিস রউফ। দশম ওভারের পঞ্চম বলে শ্রেয়াস আইয়ারকে (৯ বলে ১৪) ফখর জামানের হাতে ক্যাচ বানিয়ে সাজঘরে ফেরান তিনি। শুরু থেকে ভালো খেলছিলেন শ্রেয়াস, যদিও এই বলটিতে পুল করতে গিয়ে মিড উইকেটে ক্যাচ দেন তিনি।
শুরু থেকে প্রচণ্ড ধৈর্যের পরিচয় দিচ্ছিলেন ওপেনার শুভমান গিল। যদিও একটি সময় ধৈর্যচ্যূতি ঘটে তার। হারিস রউফের বলে বোল্ড হয়ে যান তিনি (৬৬/৪)। এরপর খেলায় ফেরে ভারত। পঞ্চম উইকেট জুটিতে ১৪১ বল খেলে ১৩৮ রান তুলে ভারতের স্কোরবোর্ডটা সমৃদ্ধ করেন ইশান কিশান ও হার্দিক পান্ডিয়া। জুটিতে দুজনের অবদান ছিল সমানে সমান। ইশান ৬৬ ও পান্ডিয়া ৬৯ রান করেন।
দলের রান দুশ পার হওয়ার পর রউফের শিকার হন ইশান। পুল করতে গিয়ে মিড-অনে ক্যাচ তুলে নেন বাবরকে। তার আগে ৯টি বাউন্ডারি ও ২টি ছক্কায় ৮১ বলে ৮২ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলেন ইশান।
এরপর রবীন্দ্র জাদেজাকে নিয়ে ৩৪ বলে ৩৫ রানের জুটি গড়েন পান্ডিয়া। ইনিংসটাকে অবশ্য সেঞ্চুরিতে রূপ দিতে পারলেন না। ৯০ বলে ৮৭ রান করে সাজঘরে ফিরেছেন আফ্রিদির শিকার হয়ে (২৩৯/৬)। ওই ওভারেই জাদেজাকেও (২২ বলে ১৪ রান) শিকারে পরিণত করেন পেস তারকা আফ্রিদি (২৪২/৭)। পরের বলে শারদুল ঠাকুরকে (৩) সাজঘরের পথ দেখান নাসিম শাহ।
নবম উইকেটে ১৯ রান যোগ করে পাকিস্তানকে বেশ ভুগিয়েছেন জসপ্রিত বুমরাহ ও কুলদীপ যাদব। দুজনকেই অল্প সময়ের ব্যবধানে আউট করে স্বস্তি ফেরান নাসিম।
ভারতের উইকেটগুলো ভাগাভাগি করেন পাকিস্তানের তিন পেসার। আফ্রিদি ৩৫ রানে ৪টি, নাসিম ৩৬ রানে ৩টি ও রউফ ৫৮ রানে ৩টি উইকেট নেন। দুই স্পিনার শাদাব খান ও মোহাম্মদ নওয়াজ ১৭ ওভারে ১১২ রান খরচ করে ছিলেন উইকেটশূন্য।
ওয়ানডে ক্রিকেটে ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথের সূচনা সেই ১৯৭৮ সালে। ৫০ ওভারের ক্রিকেটে দুই দল সর্বশেষ মুখোমুখি হয়েছে ২০১৯ সালের বিশ্বকাপে। দুই প্রতিবেশী ও চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশ এখন পর্যন্ত ১৩২টি ওয়ানডে ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে। এর মধ্যে পাকিস্তান ৭৩টিতে ও ভারত ৫৫টিতে জিতেছে। ফলহীন ছিল ৪টি ম্যাচ।
এশিয়া কাপের ওয়ানডে ফরম্যাটে ১৩ বারের লড়াইয়ে ভারত ৭টি ও পাকিস্তান ৫টি জিতেছে। আর টি২০ ফরম্যাটে তিনবারের দেখায় ভারত ২টি ও পাকিস্তান ১টিতে জিতেছে। সব মিলে, এশিয়া কাপে ১৬ বারের মোকাবেলায় ভারত ৯টি ও পাকিস্তান ৬টি ম্যাচ জিতেছে।