বিশ্বকাপে নিজেদের শেষ ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টসে হেরে ফিল্ডিংয়ে নামেন বাবররা। কাগজে-কলমে ক্ষীণ সম্ভাবনা থাকায় ইংলিশদের বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিংইয়ে নেয়ার দরকার ছিল বাবর আজমদের। তবে শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিয়েছে পাকিস্তান।
এদিন টস জিতে শুরুতে ব্যাটিং বেছে নিয়েছেন জস বাটলার। ফলে সেমিতে যাবার ক্ষীন আশাটাও মাটিতে যায় ম্যান ইন গ্রিনদের। আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ৩৩৭ রানের সংগ্রহ পায় ইংলিশরা। এতে সেমিফাইনালের সমীকরণ মেলাতে হলে পাকিস্তানকে এই লক্ষ্য ছুঁতে হবে ৬.৪ ওভারের মধ্যে, যা প্রায় অসম্ভব। ফলে ব্যাটিংয়ে নামার আগে বিশ্বকাপ থেকে পাকিস্তানের বিদায় একপ্রকার নিশ্চিত ছিলো।
এদিন ইংলিশদের দেয়া পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ম্যান ইন গ্রিনদেরে ব্যাটিং বিপর্যয়ে শেষ পর্যন্ত লড়াই করতে পারেনি বাবররা। ৪৪তম ওভারে ২৪৪ রানে গুটিয়ে যায় পাকিস্তান। ফলে ৯৩ রানের বড় ব্যবধানে জয়ে বিশ্বকাপ মিশন শেষ করল জস বাটলাররা।
৩৩৮ রানের লক্ষ্যে নিয়ে নেমে বাবররা মরণ-কামড় দেবেন, হয়তো ভেবেছিল কলকাতাবাসী। হয়তো উপভোগ্য ম্যাচের আশায় ছিল ক্রিকেটের নন্দনকানন। কিন্তু শুরুতেই সে গুড়ে বালি ঢেলে দিয়েছে ইংলিশ বোলাররা। দুই ওপেনার ফেরেন ১০ রানের মধ্যে। শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে তোলার চেষ্টা করেন বাবর আজম ও রিজওয়ান। দুই জনের ব্যাটে বেশ ভালোভাবেই এগুচ্ছিল পাকিস্তান।
কিন্তু দলীয় ৬১ রানে বাবর সাজঘরে ফিরলে আবারও চাপে পড়ে পাকিস্তান। অধিনায়ক বাবরও চরম হতাশার বিশ্বকাপ শেষ করলেন ব্যর্থতা দিয়েই। ৩৮ রানে ফেরেন তিনি। সেই চাপ আর কাটিয়ে উঠতে পারেনি পাকিস্তান। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে দলটি। শেষ পর্যন্ত ডেভিড উইলির ৩ উইকেট, মঈন আলী ও আদিল রশিদের জোড়া উইকেটে ২৪৪ রানে অলআউট হয় পাকিস্তান। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫১ রান আসে সালমান আগার ব্যাট থেকে।
এর আগে টসে জিতে ইংল্যান্ডের হয়ে উদ্বোধনী জুটিতে ব্যাটিংয়ে আসেন জনি বেয়ারস্টো ও ডেভিড মালান। এই দুই জুটিতে দারুণ শুরু এনে দেন ইংলিশদের। তবে ব্যক্তিগত ৩১ রানে মালান ফিরলে ভাঙে দুজনের ৮২ রানের উদ্বোধনী জুটি। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে ব্যাট হাতে নামা জো রুটকে নিয়ে রান এগোতে থাকেন বেয়ারস্টো। দেখে শুনে খেলতে থাকা জনি ক্যারিয়ারের ১৭তম অর্ধশতক তুলে নেন।
তবে ফিফটির পর ইনিংস বড় করতে পারেননি এই ডানহাতি ব্যাটার। দলীয় ১০৮ রানে ৫৯ করে হারিস রউফের বলে আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন। পরে তৃতীয় উইকেটে ব্যাট হাতে নামেন বেন স্টোকস। রুটকে সঙ্গে নিয়ে পাকিস্তান বোলারদের ওপর চড়া হতে থাকেন স্টোকস। তবে দলীয় ২৪০ রানে শতকের কাছ যেয়ে স্টোক আউট হলে ভাঙে ১৩২ রানের এই জুটি। শাহিন শাহ আফ্রিদির বলে আউট হবার আগে ৭৬ বলে ৮৪ রান করেন তিনি।
সঙ্গী আউট হলে বেশিক্ষণ উইকেটে টিকতে পারেননি রুটও তার অর্ধশতকের পরে ইনিংসটি থামে ব্যাক্তিগত ৬০ রানে। দ্রুত দুই উইকেট হারিয়ে বড় সংগ্রহের পথে কিছুটা থিতু হয়ে পরে ইংলিশরা। সেখান থেকে পঞ্চম উইকেটে জস বাটলার ও হ্যারি ব্রুক চড়া হন পাকিস্তান বোলারদের ওপর।
তবে ৩০২ রানে ব্রুক আউট হলে ভাঙে ২৬ বলে ৪৫ রানের এই জুটি। ব্রুক আউট হলে বেশিক্ষণ উইকেটে টিকতে পারেননি ইংলিশ অধিনায়ক বাটলারও। দলীয় ৩০৮ রানে ২৭ করে আউট হন তিনি। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ৩৩৭ রানের সংগ্রহ পায় জস বাটলারে দল। পাকিস্তানের হয়ে বল হাতে সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট নেন হারিস রউফ। এছাড়া দুইটি করে উইকেট পান শাহিন শাহ আফ্রিদি ও মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়র।