অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের সেমিফাইনালে ভারতের দেওয়া মামুলি পুঁজি তাড়া করতে নেমে ছন্নছাড়া ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশকে কিছুটা এলোমেলো দেখাচ্ছিল। ১৮৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৩৪ রান তুলতেই ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে টাইগার যুবারা। এরপর ব্যাকফুটে থাকা লাল-সবুজের শিবিরকে পথ দেখান আরিফুল ও আহরার জুটি। এই জুটির অসাধারণ ব্যাটিংয়ে ঘুরে দাঁড়িয়ে শেষ পর্যন্ত ৪ উইকেট হাতে রেখে ভারতকে কাঁদিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে লাল-সবুজের যুবারা।
ফাইনালে উঠার লক্ষ্যে ১৮৯ রান তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারেই জিসান আলমকে হারায় বাংলাদেশ। রাজ লিম্বানির অফ-স্ট্যাম্পের বাইরে ঢোকা ডেলিভারি লাইন মিস করে বোল্ড হন এই ওপেনার।
এরপর তিনে নেমে ভালো শুরুর আভাস দিলেও বেশিক্ষণ ক্রিজে থিতু হতে পারেননি চৌধুরি মোহাম্মদ রিজওয়ান। নামান তিওয়ারির অফ স্ট্যাম্পের বাইরের ডেলিভারিতে কভারে থাকা শচিনকে ক্যাচ দিয়ে ১৩ রানে ফেরেন এই টপ-অর্ডার ব্যাটার।
আরিফুলের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে প্যাভিলিয়নে ফেরেন দারুণ ছন্দে থাকা আশিকুর। সৌমির বলে পুশ করে সিঙ্গেল নিতে চেয়েছিলেন আরিফুল। আশিকুরও তাতে সাড়া দিয়েছিলেন। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গেলে নিজেকে গুটিয়ে নেন আরিফুল। এতে রান-আউটের ফাঁদে পড়ে সাজঘরে ফেরেন আশিকুর।
এরপর বাংলাদেশকে টেনে তোলেন আরিফুল ও আহরার। শুরু থেকেই দেখেশুনে ব্যাট করতে থাকেন তারা। আহরার কিছুটা দ্রুত গতিতে রান তুললেও ধীরগতিতে রানের চাকা সচল রাখেন আরিফুল।
তবে ম্যাচের একদম শেষ দিকে অতি আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে সেঞ্চুরি মিস করেন আরিফুল। নামানের ডেলিভারিতে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ৯৪ রানে সেঞ্চুরি না পাওয়ার আক্ষেপ নিয়ে ফিরেছেন তিনি।
এরপর শিহাব জেমস দ্রুতই ফিরেছেন। আর হাফ-সেঞ্চুরির আগে আহরারও ফিরেছেন। তবে দলের জয় নিশ্চিত করেই মাঠ ছেড়েছেন রাব্বি এবং পারভেজ।
ভারতের হয়ে নামান তিওয়ারি তিনটি উইকেট নিয়েছেন। এ ছাড়া দুটি উইকেট শিকার করেছেন রাজ লিম্বানি।
এর আগে, টসে জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন টাইগার অধিনায়ক মাহফুজুর রহমান রাব্বি। দলপতির সিদ্ধান্তকে সঠিক প্রমাণ করতে খুব একটা সময় নেননি মারুফ। ইনিংসের সপ্তম ওভারের মধ্যেই তিন উইকেট শিকার করে ভারতীয়দের চাপে ফেলে দেন তিনি।
ইনিংসের দ্বিতীয় বলে আদর্শকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন তিনি। নিজের পরের ওভারে আর্শিন কুলকার্নিকে মোহাম্মদ শিহাবের ক্যাচ বানিয়ে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান তিনি। এরপর নিজের ব্যক্তিগত চতুর্থ ওভারে ভারতের অধিনায়ক উদয় সরণকে শূন্য রানে ফেরান বাঁহাতি এই পেসার।
এরপর ভারতীয় শিবিরের হাল ধরেন প্রিয়ানসু মলিয়া ও শচিন দাস জুটি। ৩ বাউন্ডারিতে ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন শচিন। তবে ইনিংস লম্বা করতে পারেননি তিনি। শচিনের পর মলিয়াকেও প্যাভিলিয়নের পথ দেখান ইমতিয়াজ বর্ষণ।
এরপর শূন্য রানে রান-আউট হয়েছেন আরাভেলি আভানিশ। তবে সপ্তম উইকেট জুটিতে ৮৪ রান যোগ করে মুশির আহমেদ ও মুরগান অভিষেক জুটি। এই জুটিতেই একশো পেরিয়ে যায় ভারত। তবে ব্যক্তিগত ৫০ রানের পরই ফেরেন মুশির।
অন্যদিকে অভিষেকের ব্যাট থেকে আসে ৭৪ বলে ৬২ রানের ইনিংস। এই জুটি ভাঙেন বাংলাদেশ অধিনায়ক রাব্বি। মাঝে সাউমি সাজঘরে ফেরান পারভেজ রহমান জীবন।
এরপর শেষ ব্যাটার তিওয়ারিকে এলবিডব্লিউ করে ভারতীয় ইনিংস গুটিয়ে দেন জীবন।