ফ্রান্সকে ডুবিয়ে ১২ বছর পর ইউরোর ফাইনালে স্পেন

প্রকাশ : ১০ জুলাই ২০২৪, ০৭:২০ | অনলাইন সংস্করণ

ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে সেমিফাইনালে ফ্রান্সকে ২-১ গোলে হারিয়ে ফাইনাল মঞ্চে উঠে এলো স্পেন। ১৬ বছরের ইয়ামাল ও দানি অলমোর গোলে জয় পেয়েছে লা রোযারা।

শুরুতে পিছিয়ে থেকেও শেষ পর্যন্ত জয় পেয়ে ১২ বছর পর ইউরোর ফাইনালে জায়গা নিশ্চিত করল দে লা ফুয়েন্তের দল। এই জয়ের মাধ্যমে প্রথম দল হিসেবে ইউরোতে টানা ছয় ম্যাচ জেতার রেকর্ড গড়ল স্পেন। রেকর্ড হয়েছে লামিনে ইয়ামালেরও। ১৬ বছরের এই কিশোর এখন ইউরোর ইতিহাসের সবচেয়ে কম বয়েসী গোলদাতা।

বুধবার (১০ জুলাই) জার্মানির মিউনিখ ফুটবল এরিনাতে ২-১ গোলে জয় পায় স্পেন। দলের হয়ে গোল করেন লামিন ইয়ামাল ও দানি ওলমো। আর ফ্রান্সের হয়ে গোল করেন কোলো মুয়ানি।

সর্বশেষ ২০১২ সালে ফাইনাল খেলেছিল স্প্যানিশরা। ওই আসরে শিরোপাও জিতেছিল দলটি। এক যুগ পর ফাইনালে যাওয়া স্পেনের সামনে এবার শিরোপা জয়ের সুযোগ।

ম্যাচের শুরুতে আক্রমণে এগিয়ে ছিল স্পেন। দ্বিতীয় মিনিটেই সুযোগ পেয়েছিল দলটি। তবে, ফ্যাবিয়ান রুইজ ক্রস করলেও অপরপ্রান্তে কেউ ছিল না। পঞ্চম মিনিটে অসাধারণ এক ক্রসে ইয়ামালের ভাসিয়ে দেওয়া বলে লাফিয়ে উঠে হেড করেন রুইজ। তবে, এবারও দলকে এগিয়ে নিতে পারেননি তিনি। গোলবারের ওপর দিয়ে চলে যায় বল। অবশ্য বল দখলে পিছিয়ে থাকলেও গোল পেতে সময় লাগেনি ফ্রান্সের। ম্যাচের অষ্টম মিনিটে বাঁ প্রান্ত দিয়ে কিলিয়ান এমবাপ্পের দারুণ ক্রসে কোলো মুয়ানি মাপা হেডে দলকে এগিয়ে নেন। ১-০ গোলে পিছিয়ে পড়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে স্পেন।

মিনিটে লিড নেওয়ার পর ফ্রান্স সেই লিড হারায়। ফ্রান্সের লিড হারাতে স্পেন সময় নিয়েছে মোটে ১৬ মিনিট। চার মিনিটের মধ্যে দুই গোল করে স্পেন এদিন জানান দিল, কেন টুর্নামেন্টে তারা এসেছে ফেবারিটের তকমা নিয়ে। ২-১ গোলের লিডে ম্যাচে আধিপত্য রেখেছে লুইস দে লা ফুয়েন্তের শিষ্যরা।

ম্যাচের ২০ মিনিটে এসে দেখা মিলল লামিনে ইয়ামাল মোমেন্ট! বক্সের বাইরে থেকে ১৬ বছর বয়েসী স্প্যানিশ টিনএজারের দুর্দান্ত এক শট। ফ্রান্স গোলরক্ষক মাইক মানিয়ানের কোনো সুযোগই ছিল না অমন এক গোল ঠেকাবার। দুর্দান্ত এক শটে সমতায় ফিরে আসে স্পেন। ২০ মিনিটেই ফ্রান্স-স্পেন সেমিফাইনাল দেখল দুই গোল। এই গোল দিয়ে রেকর্ডও করে ফেলেছেন লামিনে ইয়ামাল। ইউরোর ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে পেলেন গোলের দেখা।

এরপরেই স্পেনের আবার আঘাত। ২৪ মিনিটে হেসুস নাভাসের ক্রস থেকে বল ক্লিয়ারে ব্যর্থ হয় ফ্রান্স। ফাঁকায় পেয়ে দুর্দান্ত শট দানি ওলমোর। জুলস কুন্ডের পায়ে লেগে বল জড়ায় জালে। দানি ওলমোর সেই শট ছিল অন টার্গেট। খানিক সময় পর গোল দেয়া হলো ওলমোর নামেই। তবে নামের চেয়েও বড় ছিল স্পেনের লিড। চার মিনিটের ব্যবধানে দুই গোল করে সেমিতে স্পেনের কামব্যাক।

প্রথমার্ধ এরপরেও বিনোদন দিয়ে গেল ফুটবল ভক্তদের। ফ্রান্স আক্রমণের ধার বাড়িয়েছিল। একাধিকবার বিপজ্জনক জায়গায় ফ্রিকিকও আদায় করেছিলেন কোলো মুয়ানি-এমবাপেরা। কিন্তু সেখান থেকে গোল আদায় করতে ব্যর্থ হয়েছে ফ্রান্সের আক্রমণভাগ।

বাকি সময়ে তেমন জোরালো আক্রমণ না হওয়ায় ২-১ গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় স্পেন। বিরতির পর অবশ্য বল দখলে আধিপত্য দেখায় ফরাসিরা। ম্যাচের ৫১তম মিনিটে সুযোগ পেয়েছিল ফ্রান্স। এমবাপ্পের বাড়িয়ে দেওয়া বলে দেম্বেলে গোল অভিমুখে শট নিলেও তা সহজেই তালুবন্দী করেন স্প্যানিশ গোলরক্ষক উনাই সিমন।

পরবর্তীতে ম্যাচের ৫৯তম মিনিটে একক প্রচেষ্টায় ডি-বক্সের ভেতর প্রবেশ করেন দেম্বেলে। গোলের দেখা প্রায় পেয়েই গিয়েছিলেন তিনি। তবে,ভাগ্য সহায় হয়নি। গোলরক্ষক উনাই সিমনে হাতে লেগে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় তার শট।

৭৫তম মিনিটে ফের সুযোগ পায় ফ্রান্স। এবারও দেম্বেলের ক্রস থেকে ঠিক জায়গায় শট না নিতে পারায় সুযোগ হাতছাড়া হয় দিদিয়ের দেশম শিষ্যদের। ৮১তম মিনিটে ফের একবার ডি-বক্সের বেশ খানিকটা দূর থেকে শট করেন ইয়ামাল। এবার আর জালের দেখা পাননি তিনি। বাকি সময়ে আরও বেশ কিছু আক্রমণ করলেও গোলের দেখা পায়নি কোনো দল। ২-১ ব্যবধানের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে স্প্যানিশরা।