টেস্ট ক্রিকেটে নতুন ইতিহাস গড়ে হারল পাকিস্তান
প্রকাশ : ১১ অক্টোবর ২০২৪, ১৭:২২ | অনলাইন সংস্করণ
দুই বছর আগের রাওয়ালপিণ্ডির দুঃস্মৃতিটাই ফিরল এবার মুলতানে। আরও বাজেভাবে। সেবারও প্রতিপক্ষ ছিল ইংল্যান্ড। ২০২২ সালে ঘরের মাঠে ইংলিশদের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৫৭৯ রান করেও সিরিজের প্রথম টেস্টে হারতে হয়েছিল পাকিস্তানকে। দুই বছরের ব্যবধানে আবারও সেই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৫০০’র বেশি রান করেও ম্যাচ বাঁচাতে পারল না স্বাগতিক দল।
টেস্ট ক্রিকেটের ১৪৭ বছরের ইতিহাসে প্রথম দল হিসেবে ৫০০’র বেশি রান করেও ইনিংস ব্যবধানে হারের রেকর্ড গড়ল পাকিস্তান। অবশ্য টেস্টের প্রথম ইনিংসে কমপক্ষে ৫০০ রান করেও ম্যাচ হেরে যাওয়া পাকিস্তানের জন্য নতুন কিছু নয়। এত বড় স্কোর করেও ৫ বার ম্যাচ হেরে এ তালিকায় শীর্ষে তারা। টেস্ট ক্রিকেটে দেশটির ব্যর্থতার পাল্লাও দিনকে দিন যেন ভারি হচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৩-০ ব্যবধানে ভরাডুবির পর বাংলাদেশের বিপক্ষে ঘরের মাটিতে দুই ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে। এবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হার দিয়ে সিরিজ শুরু। এ নিয়ে টানা ছয়টি টেস্ট হারল শান মাসুদের দল।
৬ উইকেটে ১৫২ রান নিয়ে পঞ্চম দিনের খেলা শুরু করেছিল পাকিস্তান। সেখান থেকে খুব বেশি দূর এগোতে পারল না স্বাগতিকরা। ম্যাচ বাঁচাতে হলে উইকেটে থাকতে হতো পুরো তিন সেশন। তবে এক সেশনও টিকতে পারলো না শান মাসুদের দল।
গত দিন ৪১ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করা আগা সালমান আজ ফিফটির দেখা পেয়েছেন। সকালে বেশ কয়েক ওভার দেখে-শুনে ব্যাটিং করেছেন। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন আমের জামাল। তাতে সপ্তম উইকেট জুটিতে দুজনে শতরান পার করেন। তাদের এই জুটি কিছুটা হলেও পাকিস্তানি সমর্থকদের মনে আশা জাগিয়েছিল। তবে ৫৫ রান করে সালমান ফিরলে ভাঙে সেই জুটি।
এরপর দ্রুতই ফিরেছেন শাহিন আফ্রিদি ও নাসিম শাহ। আর অসুস্থ থাকায় ব্যাট করতে পারেননি আবরার আহমেদ। তাই ৯ উইকেট পরার পরই শেষ হয় পাকিস্তানের ইনিংস। আমের জামাল অপরাজিত ছিলেন ১০৪ বলে ৫৫ রান করে।
ব্যাটিং স্বর্গ মুলতানে নিজেদের প্রথম ইনিংসে তিন সেঞ্চুরিতে ৫৫৬ রানের বড় পুঁজি পেয়েছিল পাকিস্তান। নিজেদের এমন রান নিয়ে হয়তো তৃপ্তির ঢেঁকুরই তুলেছিলেন অধিনায়ক শান মাসুদ। কিন্তু পাকিস্তানের সাড়ে পাঁচশর বেশি রানও যে ইংল্যান্ডের সামনে মামুলি সংগ্রহ হয়ে যাবে তা কে ভাবতে পেরেছিল!
জো রুট ও হ্যারি ব্রুকের বিশ্বরেকর্ড গড়া জুটির সঙ্গে জ্যাক ক্রাউলি ও বেন ডাকেটের মাঝারি দুটি ইনিংসে ভর করে ইংল্যান্ড ৮২৩ রান করে নিজেদের ইনিংস ঘোষণা করে। ব্রুক ক্যারিয়ারে প্রথম ট্রিপল সেঞ্চুরির দেখা পান, রুট ষষ্ঠবারের মতো করেন ডাবল সেঞ্চুরি। ব্রুকের ৩১৭ রানের মতো রুটের ২৬২ রানের ইনিংসটাও ক্যারিয়ারসেরা। দুজনের ঝলমলে ইনিংসে দলের লিড গিয়ে দাঁড়ায় ২৬৭ রান!
গতকাল (বৃহস্পতিবার) টেস্টের চতুর্থ দিনে ২৬৭ রানে পিছিয়ে থেকে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে মুখ থুবড়ে পড়ে পাকিস্তানের ব্যাটিং অর্ডার। দলীয় শতরানের আগেই টপ অর্ডারের ৬ ব্যাটারকে হারিয়ে ফেলে স্বাগতিকরা। বড় ইনিংস খেলতে পারেননি টপ অর্ডারের কেউই।
সায়িম আইয়ুব ও সৌদ শাকিল উইকেটে থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি। আর বাবর আজম-মোহাম্মদ রিজওয়ানের মতো অভিজ্ঞরা ছিলেন পুরোপুরি ব্যর্থ।